কথায় আছে, ‘রাখে হরি মারে কে!’ এ যেন সত্যিই মিরাকেল। চতুর্থ স্টেজের ক্যানসারে পৌঁছে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এলেন হাওড়ার বাগনানের বাসিন্দা সোমা দলুই ও হালিশহরের বাসিন্দা অমিত চট্টোপাধ্যায়। আর এই অসাধ্য সাধন করেছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তাররা।
এই অভাবনীয় ঘটনায় ক্যানসার চিকিৎসার মাইলস্টোন গড়ে বিশ্বের দরবারে আলোচনার শীর্ষে পৌঁছে গিয়েছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। সোমার ক্যানসার চিকিৎসার ‘কেস স্টাডি’ গিয়েছে আন্তর্জাতিক মেডিক্যাল জার্নালে।
এরকমই আরও একটি অসাধ্য সাধন হয়েছে মেডিক্যাল কলেজে। হালিশহরের বাসিন্দা অমিত চট্টোপাধ্যায়ও ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ক্যানসার হওয়ার প্রায় আট মাস পরে চিহ্নিত হয় তা। ফলে ততক্ষণে চতুর্থ স্টেজে পৌঁছে গেছে ক্যানসার। বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ঘোরার পর মেডিক্যাল কলেজে যান অমিত। চিকিৎসা শুরু হয় ৩২ বছরের অমিতের। জানা গিয়েছে, চিকিৎসার পর তাঁরও ক্যানসার সম্পূর্ণ সেরে গিয়েছে।
মেডিক্যাল কলেজের তরফে জানানো হয়েছে, কিছুদিন আগে এক বিরল ফুসফুসের ক্যানসার ( Non squamous lung cancer ) ধরা পড়ে সোমার। ডাক্তাররা দেখেন, ক্যানসার শুধু ফুসফুস নয়, ছড়িয়ে পড়েছে গোটা শরীরেই। লিভার ও হাড়ের ভিতরের অনেকটা অংশেই ছড়িয়ে পড়েছে এই ক্যানসার। তবু হাল ছাড়েননি ডাক্তাররা। তাঁরা চিকিৎসা শুরু করেন ক্যানসারের। ক্রিজোটিনিব গ্রুপের ওষুধ দেওয়া হয় তাঁকে। তিন মাস পরে ডাক্তাররা দেখেন, ক্যানসার অনেকটা ভ্যানিস। সোমার এই উন্নতি দেখে অবাক হয়ে যান ডাক্তাররা। তাঁরা আরও তিন মাস ধরে চিকিৎসা করার পর জানিয়েছেন, ক্যানসার সেরে গিয়েছে সোমার।
সোমার স্বামী হেমন্ত জানিয়েছেন, স্ত্রীর ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য এক একটা ওষুধের দাম ছিল দেড় লক্ষ টাকা। তিনি জানিয়ে দেন, তাঁর পক্ষে অত টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। তারপরেই হাসপাতালের তরফে স্বাস্থ্যভবনে যোগাযোগ করা হয়। স্বাস্থ্যভবন ওষুধ কেনার জন্য ৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে। তারপরেই শুরু হয় চিকিৎসা। তবে ডাক্তাররা জানিয়েছেন, এখনও ওষুধ চলছে সোমার। ক্যানসার যেন আর ফিরে না আসে, সেই চেষ্টায় করছেন তাঁরা।