লোকসভা নির্বাচনে আশানুরূপ ফল হয়নি তৃণমূলের। তার জন্য যেমন আছে গেরুয়া সন্ত্রাস, তেমনই আছে মানুষের ভুল বোঝা। সেই ভুল বোঝাবুঝি কাটিয়ে উঠতে চান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই জন্যই জনসংযোগ বাড়াতে অভিনব সব কৌশল নিচ্ছে দল। তার মধ্যে অবশ্যই উল্লেখযোগ্য ‘দিদিকে বলো’ ক্যাম্পেন। সাধারণ মানুষের সব অভাব-অভিযোগ নিয়ে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে যাওয়ার এক পন্থা নিয়েছে মমতা। আর তাঁর এই কৌশলকে বাস্তবায়িত করতে তৎপর তাঁর দলের নেতা-কর্মীরা। তবে কুলটি দেখল অন্যচিত্র। এখানে স্থানীয় বিধায়ক ও মন্ত্রী মলয় ঘটক প্রচারে পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গেই আদিবাসী অধ্যূষিত গ্রামে ধামসা-মাদল বাজিয়ে তৃণমূল বিধায়ককে বরণ করে নিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্যান্ডেল খাটিয়ে চলল খাওয়া-দাওয়া, গল্পগুজব।
ভোট জিতে জনপ্রতিনিধি, এমনকী মন্ত্রীও হন অনেকেই। কিন্তু জনতার ‘কাছের মানুষ’ হয়ে উঠতে পারেন ক’জন! কুলটির তৃণমূল বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় কিন্তু পেরেছেন। স্রেফ শাসকদলের বিধায়কই নন, তিনি এডিডিএ বা আসানসোল-দুর্গাপুর ডেভালপমেন্ট অথিরিটির ভাইস চেয়ারম্যানও বটে। কিন্তু দৈনন্দিন জীবনে বাহুল্যের লেশমাত্র নেই! কুলটির বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এখনও ইসিএলের ভাঙা নোনাধরা কোয়ার্টারেই থাকেন বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। এসি গাড়িতে নয়, বাইকে চেপে ঘুরে বেড়ান এলাকায়। বিধায়কের দরবার বসে এলাকার একটি পানগুমটিতে! নস্যি রঙের শার্ট কিংবা গেঞ্জি, এলাকার বিধায়ককে অন্য কোনও পোশাকে কখনও দেখেননি সাধারণ মানুষ। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতোই সাধারণ জীবনযাপন কুলটিতে তৃণমূল বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যাকেও জনপ্রিয় করে তুলেছে।
সোমবার রাতে আদিবাসী অধ্যুষিত বড়ধাওড়া গ্রামে গিয়েছিলেন কুলটির বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। তাঁকে কাছে পেয়ে রীতিমতো উৎসবে মেতে ওঠেন গ্রামবাসীরা। দলের নির্দেশে এখন গ্রামে গিয়ে স্থানীয় কারও বাড়িতেই রাতের খাওয়া সারছেন তৃণমূল কংগ্রেসে জনপ্রতিনিধিরা। কিন্তু বড়ধাওড়া গ্রামের সকলেই যে বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়কে নিজের বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে খাওয়াতে চান! শেষপর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয়, কারও বাড়িতেই নয়, বরং গ্রামে প্যান্ডেল করে খিচুরি রান্না করা হবে। সেইমতো গ্রামবাসীদের সঙ্গে পাত পেড়ে খান বিধায়ক। রাতে গ্রামেই টালি চালের বাড়িতে ছিলেন তিনি। এই অভিনব আমন্ত্রণে স্বভাবতই খুশি রাজ্যের মন্ত্রী।