আবার বিতর্কে রেল। ‘প্রতিশ্রুতি’ মাফিক প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ রেল। ক্রমবর্ধমান লোকসান সামাল দিতে ‘ট্রেন-১৮’ প্রকল্পে নতুন অন্তত ৪০টি ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা করেছিল রেল। তার মধ্যে প্রথম দফায় ১০টি ট্রেন চালু করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মাত্র একটি ট্রেন চালু করার কথা চলছিল। কিন্তু টেন্ডার বা দরপত্র-বিতর্কের দরুন সেই প্রকল্পও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। অথচ গত আর্থিক বছরে যাত্রী-ভাড়া খাতে রেলের লোকসানের অঙ্ক ৩০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে!
প্রসঙ্গত, যাত্রী-ভাড়া খাতে ক্ষতির বোঝা কমিয়ে আয় বাড়াতেই বিভিন্ন রুটে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের ধাঁচে ‘ট্রেনসেট’ চালু করার পরিকল্পনা করেছিল রেল। চলতি আর্থিক বছরেই সারা দেশে অন্তত ১০টি রুটে ওই ট্রেন চালু করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু দরপত্র-বিতর্কে ‘ট্রেন-১৮’ প্রকল্পে উৎপাদন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে সেই লক্ষ্যমাত্রা বড় ধাক্কা খেতে পারে বলে রেলের খবর। ইতিমধ্যে রাজধানী, শতাব্দী এক্সপ্রেসের মতো ট্রেনের জায়গায় বন্দে ভারত ধাঁচে আরও আধুনিক প্রযুক্তির ট্রেন-২০ তৈরির পরিকল্পনাও বাতিল হতে বসেছে। ওই সব ট্রেনের জন্য অ্যালুমিনিয়ামের কোচ তৈরির পরিকল্পনা ছিল।
প্রকল্পের বাকি ট্রেন তৈরি বন্ধ হল কেন? রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বন্দে ভারত-সহ ‘ট্রেন-১৮’ প্রকল্পের প্রথম দু’টি রেক তৈরির পরে তৃতীয় রেকের নির্মাণকাজ চলার সময় যন্ত্রাংশ কেনার দরপত্র প্রক্রিয়া নিয়ে অভিযোগ ওঠে। আগ্রহী দেশি-বিদেশি সব সংস্থাকে যন্ত্রাংশ সরবরাহ করার টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যোগদানের সুযোগ না-দিয়ে দেশের একটি সংস্থাকে বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। ওই প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে দেশি-বিদেশি সংস্থা মিলিয়ে কমবেশি ২৫টি অভিযোগ জমা পড়ে। তার পরেই নড়েচড়ে বসে রেল। শুরু হয় ভিজিল্যান্স তদন্ত। মাঝপথেই বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন উৎপাদন।
আগামী তিন বছরেরে মধ্যে ট্রেন-১৮ প্রকল্পে ৪০টি ট্রেনসেট সরবরাহের বরাত দেওয়া হয়েছিল আইসিএফ-কে। তার মধ্যে চলতি আর্থিক বছরে ১০টি এবং পরের দু’বছরে ১৫টি করে ট্রেন তৈরি করার কথা ছিল। কিন্তু ওই লক্ষ্যমাত্রা আদৌ নির্দিষ্ট সময়ে পূরণ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।