এই প্রথম বিশ্ব ব্যাডমিন্টন সংস্থার সুপার ৫০০ মাপের কোনও প্রতিযোগিতা জিতল ভারতের ডাবলস জুটি। তাইল্যান্ড ওপেনের ফাইনালে ইতিহাস গড়ল ভারতের এক নম্বর ডাবলস জুটি সাত্যিকসাইরাজ রানকিরেড্ডি ও চিরাগ শেট্টির জুটি। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন চিনের লি জুন হুই এবং লিউ উ চেনকে হারিয়ে খেতাব জিতলেন তাঁরা। ফল ২১-১৯, ১৮-২১, ২১-১৮। শুধু তাই নয়, এই জয়, বিশ্ব ক্রম পর্যায়ে ১৬ নম্বরে থাকা জুটিকে প্রথম দশেও তুলে আনবে।
সাত্যিককে কোর্টের সামনের দিকে খেলানোর স্ট্র্যাটেজি নিয়েছিলেন ভারতের কোচ ডুয়াই ক্রিস্টিয়াওয়ান। যা দারুণ ভাবে খেটে যায়। কারণ টানা তিন দিন ম্যারাথন ম্যাচ খেলার ফলে সাত্যিকের কাঁধে ব্যথা হচ্ছিল। তবে ভারতের ফিজিয়ো জনসন সোলোমন এবং রিকভারি বিশেষজ্ঞ শ্রীনিবাস জি অক্লান্ত ভাবে চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন চোটের কারণে সাত্যিকের স্বাভাবিক খেলায় যেন কোনও প্রভাব না পড়ে।
এক ঘণ্টা দু’মিনিটের ম্যাচে সাত্ত্বিক ফ্রন্ট কোর্ট অর্থাৎ কোর্টের সামনের অঞ্চল দুরন্ত ভাবে সামলান। অসাধারণ প্লেসমেন্টে বিপক্ষকে নাজেহাল করে দিচ্ছিলেন তিনি। চিরাগ সামলাচ্ছিলেন ব্যাক কোর্ট অর্থাৎ কোর্টের পিছনের অঞ্চল। দু’জনের সমনে পড়ে প্রতিযোগিতার তৃতীয় বাছাই এবং বিশ্বের দু’নম্বর জুটি শেষ পর্যন্ত হার মানতে বাধ্য হন।
ব্যাডমিন্টনের ইতিহাস মূলত সিঙ্গলসকে কেন্দ্র করেই এত দিন আবর্তিত হয়েছে। প্রকাশ পাড়ুকোন থেকে পুল্লেলা গোপীচন্দ, সাইনা নেহওয়াল থেকে পি ভি সিন্ধু। আন্তর্জাতিক ব্যাডমিন্টনে ভারতের পতাকা তুলে ধরেছেন সিঙ্গলস তারকারা। তাঁরা ব্যর্থ হলেই ভারতীয় ব্যাটমিন্টন প্রেমীদের যাবতীয় আশা শেষ হয়ে গিয়েছে। চলতি মরসুমেই যেমন সিঙ্গলসে সে ভাবে কোনও ভারতীয় খেলোয়াড়ই সাফল্য পাননি। সাইনা নেহওয়াল ছাড়া খেতাব জিততে পারেননি কোনও ভারতীয় খেলোয়াড়ই। ইন্দোনেশিয়া ওপেনে সিন্ধু ফাইনালে উঠেও হেরে গিয়েছেন জাপানের আকানে ইয়ামাগুচির কাছে।
জয়ের পরে উচ্ছ্বসিত সাত্যিক বলেন, ‘‘অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে ওদের বিরুদ্ধে আমরা একটুর জন্য হেরে গিয়েছিলাম। আমরা জানতাম আজ ওরা চাপে থাকবে। তবে আমাদের কোনও চাপ ছিল না। প্রথম ফাইনাল খেলার জন্য আমাদের তর সইছিল না। আমার কাঁধে একটু সমস্যা হচ্ছিল। তাই ঠিক করেছিলাম আমি কোর্টের সামনের দিকে খেলব। আর কোর্টের পিছনের দিকটা সামলাবে চিরাগ। তাই আমি সার্ভিস আর নেটে ফোকাস করে গিয়েছি।’’
পাশাপাশি উচ্ছ্বাসে ভাসতে থাকা চিরাগ বলেন, ‘‘খেলোয়াড় জীবনের এটাই সেরা খেতাব আমাদের। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হারানোর আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না।’’