ডুরান্ড কাপের মধ্যেই সোমবার কলকাতা প্রিমিয়ার লিগে অভিযান শুরু করছে মোহন বাগান। শুক্রবার মরশুমের প্রথম ম্যাচে তারা হারিয়েছিল সুব্রত ভট্টাচার্যর প্রক্ষিণাধীন মহমেডান স্পোর্টিংকে। ডুরান্ড কাপের সেই ম্যাচটি হয়েছিল সল্টলেক স্টেডিয়ামে। গতবারের কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়ন মোহন বাগান অবশ্য সোমবার খেলবে নিজেদের মাঠে। প্রতিপক্ষ পিয়ারলেস।
আজ মোহনবাগান খেলবে ঘাসের মাঠে। যা চিন্তা বাড়াচ্ছে ভিকুনার। রবিবার প্র্যাকটিসের পর অবশ্য মোহন বাগান কোচ কিবু ভিকুনা উপস্থিত সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘যুবভারতীর ঘাসের মাঠের সঙ্গে মোহন বাগান মাঠের পার্থক্য আছে। তাই অনেক ভেবে চিন্তে আমাকে প্রথম একাদশ বাছতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, “ডুরান্ডের প্রথম ম্যাচটা সল্টলেকে খেললাম। কিন্তু আমাদের মাঠটা সে রকম নয়। মাটি শক্ত। বৃষ্টি হলে ভাল। রয়েছে বড় ঘাসও।’’ মালিদের ঘাস ছাঁটতে বলার পাশাপাশি, নিজেকে সামলে পরক্ষণেই বলে দেন, ‘‘এটা অজুহাত নয়। বিপক্ষকেও এই মাঠেই খেলতে হবে।’’
কিবু ভিকুনার বক্তব্য অনেকটাই ঠিক। সল্টলেক স্টেডিয়ামের মূল মাঠ কিংবা প্র্যাকটিস গ্রাউন্ড আমেরিকান বারমুডা ঘাসের তৈরি। বৃষ্টি হলেও ঘাসের নীচে জল সেই ভাবে থাকে না। যুবভারতীতে বালির ভাগ ময়দানের ঘেরা মাঠগুলির থেকে কম। বৃষ্টিভেজা মোহন বাগান মাঠে তাই ঘাসের নীচে জল থাকে। মোহন বাগানের চার বিদেশই নতুন। ক্লাবের মাঠে তারা নিয়মিত প্র্যাকটিস করলেও সোমবারই প্রথম প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ম্যাচ খেলবেন। তাই স্প্যানিশ কোচ কলকাতা লিগের আগে বিদেশিদের নিয়ে সতর্ক। তার উপর মহমেডানের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে বিরতিতে স্প্যানিশ স্টপার ফ্রান মোরান্তের হ্যামস্ট্রিং স্টিফ হয়ে গিয়েছিল। দ্বিতীয়ার্ধের ১৪ মিনিটে তাই তাঁকে তুলে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার মুনোজকে মাঠে নামান কোচ কিবু ভিকুনা। শুক্রবারের ম্যাচে কাজ চালিয়ে দেন মুনোজ। একদিন বিশ্রামের পর মোরান্তে অবশ্য রবিবার প্র্যাকটিস করেছেন। সোমবার প্রথম একাদশেই তাঁর খেলার সম্ভবনাই বেশি। গত মরশুমে বর্ষসেরা ফুটবলার অরিজিৎ বাগুইকে শুক্রবার ডুরান্ড কাপের প্রথম ম্যাচে স্টার্টিং লাইন-আপে রাখেননি কিবু। সোমবার তিনি প্রথম একাদশে আসতে পারেন। মোহন বাগান জুনিয়র দল থেকে চার ফুটবলারকে সই করানো হয়েছে। এর মধ্যে শেখ সাহিলকে প্রথম ম্যাচে পরখ করে নিয়েছেন নতুন স্প্যানিশ কোচ। আজ শুভ ঘোষ কিংবা কিয়েন নাসিরিকে তিনি আপফ্রন্টে চামোরো সিলভার পাশে ব্যবহার করতে পারেন। আক্রমণাত্মক মিডিওর ভূমিকায় থাকছেন প্রথম ম্যাচে চোখ টানা হোসেবা বেইতিয়া। বাহারি চুলের ফ্রান্সিসকো গঞ্জালেজ মুনোজকে হয়তো পরিবর্ত হিসাবে ব্যবহার করা হবে।
তবে এ বারের কলকাতা লিগ অভিযানে নামার আগের সকালে এটাই ছবি চনমনে সবুজ-মেরুন শিবিরের। টানা আট বছর পরে গত বার কলকাতা লিগ ঘরে তোলার বছরেও যে দলকে হারাতে পারেননি আজহারউদ্দিন মল্লিকরা। এগিয়ে গিয়েও শেষে মুহূর্তে ক্রোমার গোলে সেই ম্যাচ শেষ হয়েছিল ১-১।
এ বার পিয়ারলেসে সেই ক্রোমা তো রয়েছেনই। রহিম নবিদের দলে এসেছেন অ্যান্টনি উলফও। সঙ্গে দীপেন্দু দুয়ারি, অভিনব বাগ, তন্ময় ঘোষদের মতো বড় দলের প্রাক্তনরাও রয়েছেন। কোচ জহর দাস। মোহনবাগান ম্যাচের আগে তাঁর শান্ত গলায় প্রচ্ছন্ন হুঙ্কার, ‘‘মোহনবাগানের মতো বড় দলের বিরুদ্ধে অনেক কিছু প্রমাণ করার থাকে। হীনম্মন্যতায় ভোগার কিছুই নেই। আমাদের ক্রোমা, উলফরা কিন্তু একা ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারে।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘মোহনবাগানের চামোরোর হেডে গোল করার প্রবণতা রয়েছে। আমাদের দেখতে হবে ওর মাথায় যেন বল না আসে। তাই দুই প্রান্ত থেকে ওদের ক্রসগুলো বন্ধ করতে হবে।’’