আপত্তি ছিল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ)। প্রতিবাদ করেছিল বিরোধীরাও। তবে সেসবের তোয়াক্কা না করেই পাশ হয়ে যায় জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন(এনএমসি) বিল। তারপরই বিলের বিরুদ্ধে রাজধানীর পথে নেমেছিলেন আইএমএ সদস্যেরা ও চিকিৎসকদের একাংশ। এইমস থেকে প্রায় পাঁচ হাজার চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মী প্রতিবাদ মিছিলও করেন। এখনও চলছে এনএমসি বিলের বিরোধীতায় রেসিডেন্ট চিকিৎসকদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট। যার জেরে দিল্লীতে শিকেয় উঠেছে চিকিৎসা পরিষেবা।
এইমসের রেসিডেন্ট চিকিৎসকদের সংগঠন, সফদরজং হাসপাতাল, আরএমএল হাসপাতাল এবং বেশ কয়েকটি সংগঠনের সদস্যরা কর্মবিরতি পালন করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় এই বিল পাশের পর থেকেই এঁরা ধর্মঘট শুরু করেন। শুক্রবারও সেই বনধ চলে। যদিও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন ধর্মঘটীদের কাজে ফিরতে অনুরোধ করেছেন। তবে রেসিডেন্ট চিকিৎসকরা ধর্মঘটে অনড়। এই বিলের বেশ কিছু ধারা নিয়ে আপত্তি তুলেছে একাধিক সংগঠন। তারা একযোগে এই বিলকে ‘দরিদ্র বিরোধী, ছাত্র বিরোধী এবং অগণতান্ত্রিক’ বলে দাবি করেছে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবারের থেকে শুক্রবার অনেক বেশি চিকিৎসক ধর্মঘটে যোগ দেওয়ায় পরিষেবা প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ধর্মঘটী সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেন হর্ষ বর্ধন। তবে তাতে কোনও সমাধান সূত্র বেরায়নি। বৈঠকের পরে তিনি বলেন, রোগীদের প্রতি চিকিৎসকদের একটা দায়িত্ব রয়েছে। এই ধর্মঘট মেনে নেওয়া যায় না। এদিকে, জরুরি পরিষেবা বন্ধ রেখে জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন বিলের বিরোধীতায় শামিল হয়েছেন তেলেঙ্গানার জুনিয়র চিকিৎসকরাও।
উল্লেখ্য, ওই বিলের ৪৫ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের যে কোনও পরামর্শ বিনা প্রশ্নে মানতে বাধ্য থাকবে জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন। শুধু তাই নয়। গ্রামে চিকিৎসকের ঘাটতি মেটানোর নাম করে ‘বিশেষ সার্টিফিকেট’ দিয়ে সাড়ে তিন লক্ষ জনস্বাস্থ্য কর্মীকে অ্যালোপ্যাথি ওষুধ দেওয়ার অধিকার দেওয়ার কথা রয়েছে বিলের ৩২ নম্বর ধারায়। আবার, সরকার বলছে, ‘চিকিৎসকের অধীনে থেকেই সাধারণ কিছু রোগের ক্ষেত্রে মডার্ন মেডিসিন’ (অর্থাৎ অ্যলোপ্যাথি ওষুধও) দিতে পারবেন জনস্বাস্থ্য কর্মীরা। বিলটি নিয়ে চিকিৎসক সংগঠনগুলি এবং বিরোধীদের আপত্তির এটিই বড় কারণ।