বাজারে ছেয়ে গিয়েছে কালো টাকা। আর তাই নোটবন্দীর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নরেন্দ্র মোদীর সরকার। কিন্তু কেন্দ্রের এই ধারণা ভ্রান্ত ছিল। আর সেটা প্রমাণ করে দিয়েছে নোটবন্দী। একটি মামলার শুনানিতে এমনই মন্তব্য করল বম্বে হাইকোর্ট। বারবার নোট বদলে সমস্যা হচ্ছে দৃষ্টিহীনদের। এই কারণে সম্প্রতি আদালতে ‘ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর দি ব্লাইন্ড’ নামে একটি সংস্থা এক জনস্বার্থ মামলা করেছে।
সেই প্রেক্ষিতে বম্বে আদালতের প্রধান বিচারপতি প্রদীপ নন্দ্রাজোগ এবং বিচারপতি এনএম জমদারের বেঞ্চ এদিন সরকারে উদ্দেশ্যে বলেন যে, ‘সরকার বারবার বলে এসেছে, যে জাল নোট ধরার জন্য নোটবন্দী করা হয়েছে। কিন্তু এই কারণ নিয়ে আমাদের যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। নোটবন্দী দেখিয়ে দিয়েছে পাকিস্তানের ১০,০০০ কোটি টাকা নিয়ে নেওয়াটা কেবলই ভ্রান্ত একটি ধারণা।’ এরপরই বিচারপতিরা রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘কেন আপনারা বারবার নোটের আকার বদলাচ্ছেন? ডলারের তো কখনও পরিবর্তন হচ্ছে না? আপনারা তাহলে কেন করছেন?’
দেশ থেকে নকল এবং কালো টাকা দূর করার জন্য ২০১৬ সালের নভেম্বর বিমুদ্রাকরণের সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। সেই মতো পুরোনো ৫০০ টাকা এবং ১,০০০ টাকার নোটবন্দী করা হয়। যদিও পরবর্তীকালে দেখা যায়, সার্কুলেশনে থাকা অর্থের প্রায় পুরোটাই ব্যাঙ্কে জমা পড়েছে। যা কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের যথার্থতা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন খাড়া করে। শুধু তাই নয়, দেশে এ মুহূর্তে কী পরিমাণ কালো টাকা রয়েছে তার কোনও ধারণা কেন্দ্রের নেই বলে সম্প্রতি সংসদে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। বিমুদ্রাকরণ এবং তার পরবর্তী অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। এমনকী, তথ্যের অধিকার আইনে চাওয়া এক প্রশ্নের উত্তরে জানা যায়, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের লিখিত অনুমোদন পাওয়ার আগেই বিমুদ্রাকরণ প্রক্রিয়া শুরু করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার। এবার নোটবন্দী কেন ব্যর্থ হল, সেই প্রশ্নই তুলে দিল বম্বে হাইকোর্ট।