বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে মোদী সরকারের বাজেটে যেমন তেমন কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি। ঠিক তেমনই চাহিদার মানোন্নয়নেও কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে পারেনি কেন্দ্র। আর এই দুয়ের মিলনের ফলে ক্রমেই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে ভারতের শিল্প সংস্থাগুলোকে। এই অবস্থায় কার্যত তলানিতে পৌঁছেছে পরিকাঠামো বৃদ্ধিও। নিখাদ অর্থনীতির সংজ্ঞা মানলে মন্দা আসেনি ঠিকই। কিন্তু আকাশে যে তার আশঙ্কার মেঘ জমছে, সেটা স্পষ্ট খোদ সরকারি পরিসংখ্যানেই। যা তুলে ধরে গতকাল বিরোধীদের অভিযোগ, সব দেখেও মুখে কুলুপ এঁটে আছে কেন্দ্র। চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেও সঙ্কটের কথা স্বীকার করতে চাইছে না।
প্রসঙ্গত, অর্থনীতিতে তীব্র আর্থিক সঙ্কট যে দানা বাঁধছে, ইতিমধ্যেই তার ইঙ্গিত দিয়েছে বাজারে ঢিমে হওয়া বিক্রিবাটা। তার ওপর বুধবার সরকারি পরিসংখ্যানেই প্রকাশ, চলতি অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসে কর খাতে আয় বৃদ্ধি গত এক দশকে সর্বনিম্ন, মাত্র ১.৩৬ শতাংশ। জুনে পরিকাঠামো ক্ষেত্রের বৃদ্ধিও ঠেকেছে মাত্র ০.২ শতাংশে। অর্থনীতিবিদদের প্রশ্ন, এইসব যদি সম্ভাব্য মন্দার লক্ষণ না হয়, তবে আর কী হলে সরকার তা স্বীকার করবে? আবার টুইটে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে নিশানা করে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীরও হুঁশিয়ারি, অর্থনীতি লাইনচ্যুত। মন্দার ট্রেন পূর্ণ গতিতে ছুটে আসছে।
পরিস্থিতি নিয়ে এবার মুখ খুলতে শুরু করেছে শিল্পও। যেমন পরিকাঠামো সংস্থা এল অ্যান্ড টি-র নন-এগজিকিউটিভ চেয়ারম্যান এ এম নায়েকের দাবি, সরকার যা-ই বলুক না কেন, এ বছর বৃদ্ধি ৬.৫ শতাংশের বেশি হবে না। তিনি বলেন, ‘অর্থনীতির হাল ফেরাতে মুখ্যমন্ত্রী (গুজরাতের) মোদীর মতো কাজ করুন প্রধানমন্ত্রী মোদী।’ লগ্নি প্রস্তাবে ছাড়পত্র দেওয়ার মতো বিষয়ে সরকারকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আর্জিও জানান তিনি।’ অর্থনীতিবিদদের মতে, কর খাতে অর্থমন্ত্রী বিপুল আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিলেও প্রথম তিন মাসে সেই আয় বৃদ্ধি দেড় শতাংশের কম হলে, বাকি ৯ মাসে তা বাড়াতে হবে প্রায় ২২ শতাংশ হারে। সেটা কার্যত অসম্ভব।