ভেঙে গেল আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যেকার ‘ইন্টারমিডিয়েট-রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস ট্রিটি (আইএনএফ)’। তবে কি ফিরতে চলেছে ঠান্ডা যুদ্ধের সময়ের দিনগুলো? ক্ষেপণাস্ত্র হানাদারি ও পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কাকে কেন্দ্র করে ফের পেশী প্রদর্শন শুরু করবে আমেরিকা, রাশিয়া? এমনই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
৩২ বছর আগে তদানীন্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগন ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট মিখাইল গর্বাচভকে হাসি হাসি মুখে যে চুক্তিতে সই করতে দেখা গিয়েছিল, এই অগস্টে সেই চুক্তি থেকে বেরিয়ে এল আমেরিকা। পরে রাশিয়াও জানিয়ে দিল, তারাও আর থাকছে না সেই চুক্তিতে। ১৯৮৭ সালে রেগন ও গর্বাচভের সই করা আইএনএফ চুক্তির প্রেক্ষিতে ৫০০ থেকে সাড়ে ৫ হাজার কিলোমিটার (৩১০ থেকে ৩ হাজার ৪০০ মাইল) পাল্লার মধ্যে থাকা ক্ষেপণাস্ত্রগুলিকে নিষিদ্ধ করেছিল আমেরিকা ও রাশিয়া। ফলে, ওই পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হানার ধাক্কা যে সইতে হবে না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছিল দু’টি দেশ। চুক্তির প্রেক্ষিতে ১৯৯১ সালে ২ হাজার ৭০০টি ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করে আমেরিকা ও রাশিয়া।
আমেরিকা ও তার বন্ধু ‘ন্যাটো’ জোটের দেশগুলি এ বছরের গোড়ার দিক থেকেই অভিযোগ করতে শুরু করে, রাশিয়া গোপনে সেই চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করতে শুরু করেছে। আমেরিকা ও ন্যাটো জোটের দেশগুলিকে পাল্লার মধ্যে রেখে ক্রুইজ ক্ষেপণাস্ত্র বসাতে শুরু করেছে মস্কো। য়াশিংটন তার ওই বক্তব্য জানায় ন্যাটো দেশগুলির বৈঠকেও। তাতে ন্যাটো দেশগুলিও মেনে নেয় ওই মার্কিন অভিযোগ। তার পরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, রাশিয়া যদি চুক্তিটা মেনে চলতে না চায়, তা হলে আমেরিকাও বেরিয়ে আসবে চুক্তি থেকে। আর তার জন্য তিনি ২ অগস্ট পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেন। তাতে যে বিশেষ আপত্তি নেই, ঠারেঠোরে তখনই তা বুঝিয়ে দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
এর ফলে যে পরমাণু যুদ্ধের দিনগুলির আশঙ্কা জোরালো ভাবে ফিরে এল, তা বুঝিয়ে দিতে দেরি করেননি রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিও গুয়েতেরস। বলেছেন, ‘পরমাণু অস্ত্র প্রতিযোগিতায় যে ছেদ পড়েছিল, তা আবার শুরু হতে চলেছে। এতে ক্ষয়ক্ষতি হল অনেকটাই। এর ফলে, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের হানাদারির আশঙ্কা, ওই সব অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি অবশ্যই বেড়ে যাবে। কমবে না’।