গতকাল থেকেই সরগরম হয়ে উঠেছে সোশ্যাল নেটওয়ার্ক। জোম্যাটোয় খাবারের অর্ডার বাতিল কাণ্ডে বয়ে গেছে বিতর্কের ঝড়। ক্রেতার ধর্মীয় গোঁড়ামির বিরোধিতায় সরব প্রায় সকলেই৷ তবে নিজের অবস্থানে এককাট্টা ওই ক্রেতা৷ শ্রাবণ মাসের ব্রতর কারণে মুসলমান কোনো ব্যক্তির হাত থেকে খাবার নেবেন না বলেই পাল্টা যুক্তি দিয়েছেন তিনি৷ এদিকে, জোম্যাটো কাণ্ড নিয়ে যতই জলঘোলা হচ্ছে, ততই দুঃখ লাগছে বলেই নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন ডেলিভারি বয় ফৈয়াজ৷
মঙ্গলবার রাতে অমিত শুক্লা নামে জব্বলপুরের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি জোম্যাটোয় খাবার অর্ডার করেন৷ জোম্যাটোর তরফ থেকে ডেলিভারি বয় ফৈয়াজের মোবাইল নম্বর পাঠানো হয় অমিতের কাছে৷ ক্রেতার বাড়ির ঠিকানা জানার জন্য ফৈয়াজ ফোন করেন অমিতকে৷ ফৈয়াজ বলেন, ‘‘ফোন করতেই ধর্মের কথা তুলে বিশ্রীভাবে আক্রমণ করা হয়৷ সব শেষে বলা হয় শুধুমাত্র একজন মুসলিম যুবকের মাধ্যমে খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে বলে তিনি অর্ডার বাতিল করছেন৷ টাকা ফেরত না পাওয়া গেলেও কোনও সমস্যা নেই৷ কিন্তু আমার হাতের খাবার খাবেন না৷’’
দীর্ঘ কয়েকবছর জোম্যাটোর ডেলিভারি বয় হিসাবে কাজ করছেন ফৈয়াজ৷ তাঁর কথায়, ‘‘এমন অভিজ্ঞতা কর্মজীবনে এই প্রথম হল৷ ক্রেতার কাছ থেকে এতগুলো কথা শুনে খুব খারাপ লেগেছে৷ কিন্তু কী করব বলুন? আমরা গরিব মানুষ৷ তাই পেটের তাগিদে কাজ করতেই হবে৷ সহ্য করতে হবে এসব৷’’ ক্রেতার অর্ডার বাতিলের পদক্ষেপে প্রথমে বেশ খানিকটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন ফৈয়াজ৷ ভেবেছিলেন হয়তো অমিতের সিদ্ধান্তে প্রভাব পড়বে তাঁর চাকরিতে৷ কিন্তু জোম্যাটো পাশে দাঁড়ানোয় কিছুটা হলেও মনের জোর ফিরে পেয়েছেন ফৈয়াজ৷
জোম্যাটোর ব্যতিক্রমী পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন নেটিজেনরাও৷ অমিত শুক্লার বিরোধিতায় সরব প্রায় সকলেই৷ জোম্যাটোর পাশে দাঁড়িয়েছেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা৷ এই পদক্ষেপের জন্য জোম্যাটোর প্রতি সম্মান বেড়ে গেল বলেই টুইটে লিখেছেন তিনি৷