গত সোমবারই নজরুল মঞ্চে জনসাধারণের সুবিধার জন্য এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের নাগরিকদের সঙ্গে জনসংযোগ বাড়ানোর জন্য ‘দিদিকে বলো’-র একটি ফোন নম্বরও দেওয়া হয়েছে। যেখানে ফোন করলে দিদির সঙ্গে নিজের সুবিধা অসুবিধা নিয়ে সরাসরি কথা বলা যাবে। দেওয়া যাবে পরামর্শও। এই কর্মসূচীর প্রথম দিন থেকেই ব্যাপক সাড়া ফেলেছে মানুষের মধ্যে। এই প্রকল্পকে সফল করতে আরও বেশি করে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে কর্মসূচীর প্রচারে নেমে পড়লেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা।
বুধবার ‘দিদিকে বলো’ নিয়ে প্রচারের জন্য সাংবাদিক বৈঠকে অবতীর্ণ হলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এই প্রকল্পে মানুষ কিভাবে উপকৃত হবেন সে বিষয়ে জানালেন পার্থবাবু। তিনি বললেন, “আমরা বারবারই গিয়ে মানুষদের নম্বরটা দেব। যাতে সবাই কথা বলার সুযোগ পায়। তৃণমূলের সম্পদ যেমন কর্মী, তেমন বাংলার সম্পদ হচ্ছেন দিদি।’ আজ বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক হিসাবে আমি বলছি, আমরা মানুষের জন্য কাজ করছি ও আমার সবাইকে সুযোগ দিতে চাইছি সবাই যাতে দিদির সাথে কথা বলতে পারেন। জনসংযোগ করাই এই প্রকল্পের ক্ষেত্রে আমাদের একমাত্র উদেশ্য। দিদির সাথে কথা বললে সাধারণ মানুষও শান্তি পায়। এখানে সরাসরি মানুষ সুবিধা-অসুবিধার কথা বলতে পারবে। জনগনের সাথে দিদির শুধু একটি ফোনের ব্যবধান। আমরা জানি, মানুষ সেটা ব্যবহার করবেন। মানুষের সাথে যোগাযোগের এই পদক্ষেপে অনেকটা পোক্ত হবে সম্পর্ক। এতে যিনি বহু দূরে থাকেন, তিনিও উপকৃত হবেন। এতে আমারাও অনেক বেশি উৎসাহী। কারণ সব বিষয় দিদির কানে যাবে”।
অন্যদিকে প্রথম দিনই হাওড়ায় ব্যাপক সাড়া পেলেন সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায়। এদিন মধ্য হাওড়ার ২৪ নং ওয়ার্ডে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচীর সূচনা করেন মন্ত্রী। ওই ওয়ার্ডের ময়রাপাড়া ও সংলগ্ন এলাকায় প্রায় এক হাজার মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। তাঁদের সুবিধা–অসুবিধার কথা জানতে চান। ফোন নম্বর সংবলিত ‘দিদিকে বলো’ ভিজিটিং কার্ড ও লিফলেট বিলি করেন তিনি। পাশাপাশি স্থানীয় দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকও করেন।
‘দিদিকে বলো’ কার্ডের সঙ্গে গোলাপ ফুল বিলি করে বুধবার জনসংযোগ শুরু করলেন চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার। সঙ্গে ছিলেন চুঁচুড়া পুরসভার পুরপ্রধান গৌরীকান্ত মুখার্জি, উপপুরপ্রধান অমিত রায়–সহ দলীয় কর্মীরা। এদিন সকালে চুঁচুড়ার খাদিনা মোড় থেকে তৃণমূল কার্যালয় থেকে শুরু হয় এই কর্মসূচি। বাঁশবেড়িয়া পুরসভায় সাংবাদিক সম্মেলনের পর ‘দিদিকে বলো’–র প্রচার শুরু করেন কৃষি বিপণনমন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত। সঙ্গে ছিলেন পুরসভার চেয়ারপার্সন অরিজিতা শীল, জেলা পরিষদের উপাধ্যক্ষ নিঃশেষ ঘোষ, কর্মাধ্যক্ষ মনোজ চক্রবর্তী, কাউন্সিলর অমিত ঘোষ প্রমুখ। এদিনই এই কর্মসূচির সূচনা করেন উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল।
এদিন সকালে বরানগর পুরসভার পুরপ্রধান অপর্ণা মৌলিক, পুর পারিষদ দিলীপ নারায়ণ বসুকে সঙ্গে নিয়ে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচী উপলক্ষে সাংবাদিক সম্মেলন করলেন মন্ত্রী তাপস রায়। অন্যদিকে, সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়ে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি শুরু করলেন বিধায়ক নির্মলকান্তি ঘোষ। ছিলেন পানিহাটি পুরসভার পুরপ্রধান স্বপন ঘোষ। এদিন এই কর্মসূচির সূচনা করেন বিধায়ক পার্থ ভৌমিকও।
মুখ্যমন্ত্রীর ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির প্রচারে নেমে বুধবার দুপুরে বারুইপুরের হরিহরপুর পঞ্চায়েতের বিড়াল বৈকণ্ঠপুর গ্রামের ক্লাবে বসে মানুষের সমস্যা, অভিযোগ শুনলেন বারুইপুর পশ্চিমের বিধায়ক ও বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান ব্যানার্জি। তাঁর পাশাপাশি এদিন এই কর্মসূচি উপলক্ষে সোনারপুরের জয়হিন্দ সভাগৃহে এলাকার কাউন্সিলর ও পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করলেন বিধায়ক ফিরদৌসি বেগম।
রাসবিহারীতে মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ‘দিদিকে ব্লো’ লেখা গেঞ্জি পরে সাংবাদিক বৈঠক করেন। বলেন, ‘এলাকার কর্মীরা জনসংযোগের কাজ শুরু করে দিয়েছেন। দল থেকে বলে দেওয়া হয়েছে, কোন এলাকায় আমাকে যেতে হবে।’ টালিগঞ্জে বিজয়গড়ে কয়েকজন কাউন্সিলরকে নিয়ে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস মিডিয়াকে বলেন, ‘সাধারণ মানুষ নেত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলে অভাব–অভিযোগ জানাতে পারবেন। এই উদ্যোগকে একজন কর্মী হয়ে স্বাগত জানাই। চারদিকে সাড়া পড়ে গেছে।’ খাদ্যমন্ত্রী জোতিপ্রিয় মল্লিক, দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু, নারী ও শিশুকল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী শশী পাঁজা, সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়, স্বাস্থ্য দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য নিজের কেন্দ্রে সাংবাদিক বৈঠক করেছেন।