সমালোচকদের একহাত নিলেন জাতীয় নির্বাচক কমিটির প্রধান এম এস কে প্রসাদ। তিনি বলেছেন, ‘অনেকেরই ধারণা রয়েছে, বেশি ম্যাচ খেললে বেশি জানা যায়। আমি এটা বিশ্বাস করি না।’ উল্লেখ্য, মাত্র ১৩টি টেস্ট খেলেই এম এস কে প্রসাদ জাতীয় নির্বাচকমণ্ডলীর প্রধান নিযুক্ত হয়েছিলেন। যা নিয়ে অনেকেই সমালোচনায় মুখর হলেও প্রসাদ কিন্তু কখনই এই বিষয়টি পাত্তা দেননি। সুনীল গাভাসকরের বিতর্কিত মন্তব্যেরইপাল্টা জবাব দিলেন জাতীয় নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান এম এস কে প্রসাদ। দিন কয়েক আগে গাভাসকর নিজের লেখায় জাতীয় নির্বাচকদের ‘অকর্মণ্য’ বলে আক্রমণ করেছিলেন। প্রশ্ন তুলেছিলেন, তাঁদের যোগ্যতা নিয়ে। এমনও দাবি তোলেন যে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে স্বল্প অভিজ্ঞতাসম্পন্ন লোকেদের নির্বাচক করা হয়েছে। তাই তাঁরা কাঠপুতুল হয়েই থেকে গিয়েছেন। যা নিয়ে এ বার মুখ খুললেন প্রসাদ।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে একান্ত সাক্ষাৎকার দিয়েছেন এম এস কে প্রসাদ। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, বর্তমান নির্বাচক কমিটির সদস্যদের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা নিয়ে বার বার প্রশ্ন ওঠে। এটা কী আপনাকে আঘাত করে না? জবাবে তিনি বলেন, ‘একটা বিষয় স্পষ্ট করে দিতে চাই, বোর্ডের নিয়ম মেনেই বর্তমান জাতীয় নির্বাচক কমিটি গঠন করা হয়েছিল। প্রত্যেকেই দেশের হয়ে খেলেছে বিভিন্ন ফরম্যাটে। পাশাপাশি আমরা ৪৭৭টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচেও প্রতিনিধিত্ব করেছি। আমরা এক সঙ্গে ২০০-র বেশি ম্যাচ দেখেছি নির্বাচক হওয়ার পর। এর পরেও কী মনে হয়, ক্রিকেটার কিংবা নির্বাচক হিসাবে আমাদের অভিজ্ঞতা কম? আমরা কি খেলাটা ভালো বুঝি না?
আপনাদের যে ভাবে ‘অকর্মণ্য’ বলা হয়েছে, তাতে কি রাগ হচ্ছে না? প্রশ্ন করা হয়েছিল প্রসাদকে। যার জবাবে নির্বাচক-প্রধান বলেন, ‘‘এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। কিংবদন্তি ক্রিকেটারদের আমরা সব সময় শ্রদ্ধা করি। তাঁদের মতামত সব সময়ই মাথায় রাখা হয়। দুঃখ নয়, এই ধরনের মন্তব্য আমাদের নির্বাচক কমিটিকে আরও শক্তিশালী, আরও ঐক্যবদ্ধ করে তোলে।’’
প্রসাদ এখানেই থামেননি। তিনি উদাহরণ হিসেবে টেনে এনেছেন প্রয়াত রাজসিংহ দুঙ্গারপুরকেও। বলেছেন, ‘‘যদি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতাই এত গুরুত্বপূর্ণ হবে, তা হলে আমাদের প্রিয় রাজসিংহ দুঙ্গারপুর কী ভাবে নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান হয়েছিলেন? উনি তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেননি। হয়তো দুঙ্গারপুর স্যর দায়িত্বে না থাকলে ১৬ বছর বয়সে সচিন তেন্ডুলকর নামক হিরের খোঁজও কেউ পেত না।’’
গাভাসকরের মন্তব্য শুধু প্রসাদই নন, সঞ্জয় মঞ্জরেকরের মতো প্রাক্তন মুম্বই ক্রিকেটারও মেনে নিতে পারেননি। মঞ্জরেকর এ দিন টুইট করেছেন, “ স্যরকে সম্মান করেই বলছি, উনি ভারতীয় নির্বাচক সম্পর্কে এবং বিরাট কোহলিকে অধিনায়ক রেখে দেওয়া নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, তার সঙ্গে আমি একমত হতে পারছি না। না, ভারত মোটেই ‘বিশ্বকাপে গড়পরতার চেয়েও খারাপ খেলেনি’। ওরা সাতটা ম্যাচ জিতেছে, দুটো হেরেছে। শেষ ম্যাচটায় তো খুবই লড়াই হয়েছিল। এক জন নির্বাচক ক’টা আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে, তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সে তার কাজের প্রতি কতটা সৎ।’’