রোজের মতোই সন্ধে নামার আগে মাঠে চাষের কাজে ব্যস্ত ছিলেন কৃষকেরা। হঠাৎ আকাশ থেকে তীর বেগে কিছু একটা পড়ল মাটিতে। ভীষণ জোরে একটা আওয়াজে আশপাশটা কেঁপে উঠল। সেই মুহূর্তে এই মহাজাগতিক বিষয়কে না বুঝতে পারাই স্বাভাবিক। আতঙ্কে মাঠ থেকে সরে যান কৃষকেরা। পরে তাঁরা কাছে গিয়ে দেখেন মাটির ভিতের পুঁতে রয়েছে একটা বিশালাকার পাথর। তার গা থেকে তখনও ধোঁয়া উঠছে। বুধবার বিহারের মধুবনির এই ঘটনায় হতচকিত হয়ে যান গ্রামবাসীরা। খবর যায় স্থানীয় প্রশাসনে। এই পাথরের রহস্য এখনও পুরোপুরি জানা যায়নি, তবে প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হচ্ছে, এই রহস্যজনক পাথর আসলে একটি উল্কাপিণ্ড।
আপাতদৃষ্টিতে পাথরটিকে খসে পড়া উল্কার অংশ বলে মনে হলেও বিহারের শ্রীকৃষ্ণ সায়েন্স সেন্টারের বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাচ্ছেন পাথরটিকে নিয়ে। সূত্রের খবর, পাথরটির বাইরের অংশে একাধিক আঙুলের ছাপের মতো খাঁজ রয়েছে। লোহার জিনিস কাছে নিয়ে লেগে আকর্ষণ করছে, অর্থাৎ তার চৌম্বক ধর্মও রয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, পাথরটার বাইরের অংশে আঙুলের ছাপের মতো যে খাঁজ দেখা যাচ্ছে, সাধারণত উল্কা পৃথিবীর বায়ুস্তর ভেদ করার সময় এই খাঁজ হয়ে থাকে।
ওই পাথরটি আপাতত বিহার মিউজিয়ামে রাখা রয়েছে। তাঁর ওজন ১৫ কিলোগ্রাম এবং আকার একটা ফুটবলের মতো এবং হলদে রঙের। কিছুক্ষণের মধ্যেই খবরটি মধুবনীর জেলাশাসকের কানে পৌঁছয়। তিনি সেটিকে সংগ্রহ করে যাচাইয়ের জন্য জাদুঘরে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের কানেও পৌঁছয় খবরটি। তিনি জাদুঘরে পাথরটি দেখতে আসেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, পাথরটি যখন আকাশ থেকে নীচে পড়ে মাঠে অনেকেই কাজ করছিলেন। দ্রুত গতিতে নীচে নামার সময় আওয়াজে উপরে দিকে তাকিয়ে তাঁরা দেখেন, কিছু একটা দ্রুত গতিতে নীচে নেমে আসছে। কিন্তু বস্তুটি কী তা বোঝা যাচ্ছিল না। নীচে পড়ার পর প্রায় ৪ ফুট গভীর গর্ত হয়ে যায়। পরে সেই গর্ত থেকে সেটাকে টেনে তুলে আনে স্থানীয় প্রশাসন।