দ্বিতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরেই, আসামে ফের এনআরসি নিয়ে উঠেপড়ে লেগেছে মোদী সরকার। দিন কয়েক আগেই এনআরসিতে হেনস্থার শিকার হতে হয়েছিল সদ্য নির্বাচিত কংগ্রেস সাংসদের মাকে। বাদ যাননি কার্গিল যোদ্ধা প্রাক্তন সেনাকর্মী মহম্মদ সানাউল্লাহ ও তাঁর পরিবারও। তাঁকে ‘বিদেশি’ তকমা দিয়ে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছিল। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় রিপোর্টে জানিয়েছে, মার্চ মাস অবধি আসামের মোট ১,১৭,১৬৪ জন বাসিন্দাকে ‘বিদেশি’ ঘোষণা করেছে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল বা বিদেশি ন্যায়াধিকরণ আদালত। আর এবার জানা গেল, এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা বের হওয়া পর্যন্ত সবুর না করে, তার আগেই শুরু করে দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশি নাগরিকদের সেদেশে ফেরত পাঠানোর কাজ।
সংবাদ সংস্থা বিবিসি সূত্রে খবর, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের করিমগঞ্জ থেকে এমনই ৩০ জনকে প্রতিবেশী দেশে পাঠানো হল। সীমান্তের ওপারে জকিগঞ্জে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ অফিসারদের উপস্থিতিতে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। বিবিসি জানাচ্ছে, আসামের করিমগঞ্জ জেলা প্রশাসন বৃহস্পতিবার এই ৩০ জন বাংলাদেশি নাগরিককে সীমান্তের ওপারে পাঠিয়ে দেয়। এদের মধ্যে ২৬জন মুসলিম ও চারজন হিন্দু। এরা বেশ কয়েকমাস ধরে বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে আটক ছিলেন। তবে ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই আসাম পুলিশের সাফাই, ফেরত পাঠানো এই তিরিশ জনের সকলেই নাকি অবৈধভাবে ভারতে ঢুকেছিল। সেই অপরাধে জেল খাটার পর বাংলাদেশে তাদের ঠিকানা ও পরিচয় যাচাই করেই ফেরত পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত মে মাসে অসমের সুতারকান্দি সীমান্ত চেকপোস্ট দিয়ে আরও ২১ জন বাংলাদেশিকে সে দেশে পাঠানো হয়।
বিবিসির রিপোর্টে বলা হয়েছে, আসামের কিছু রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীদের দাবি, কুড়ি-তিরিশজন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো গেলেও ডিপোর্ট করা লক্ষ লক্ষ বাংলাভাষী ও তথাকথিত বিদেশি নাগরিক হিসেবে চিহ্নিতদের কখনই বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। উল্লেখ্য, এনআরসি অর্থাৎ জাতীয় নাগরিকপঞ্জীর প্রয়োগ ঘিরে লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই উত্তপ্ত অসম সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি। বাংলাভাষী দেখলেই তাকে বাংলাদেশি বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। আক্রান্ত হচ্ছেন উত্তর পূর্বের বাঙালিরা। এর জেরে ছড়িয়ে রয়েছে অসন্তোষ। বিশেষ করে নিম্ন অসমের বরাক উপত্যকার করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দি, কাছাড়ের বাসিন্দারা হেনস্থার শিকার।