‘সংসদের বিষয় উপদেষ্টা কমিটি আসলে সময় ধার্য করা কমিটিতে পরিণত হয়েছে।’ প্রায় রোজই কোনও না কোনও বিল পেশ, আলোচনা আর সংখ্যার জোরে তা পাশ করিয়ে নেওয়ার যে ট্রেন্ড শুরু করেছে কেন্দ্র, তার বিরোধীতা করতে গিয়েই গতকাল ঠিক এই ভাষায় মোদী সরকারকে আক্রমণ করেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা তথা প্রধান জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন। ডেরেকের সুরেই কেন্দ্রের বিরোধীতা করেন অন্যান্য বিরোধীরাও।
‘প্রায় রোজই কোনও না কোনও বিল পেশ, আলোচনা আর সংখ্যার জোরে তা পাশ করে নেওয়া সংসদের কাজ নয়।’ সােমবার এই মর্মেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয় বিরোধীরা। তাদের প্রশ্ন, ‘বিলের উপযুক্ত স্কুটিনি কেন হবে না? ১৭তম লোকসভার প্রথম অধিবেশন শুরু হয়েছে এক মাস হয়ে গেল। অথচ, এখনও পর্যন্ত একটি সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটি ঘোষণা হল না কেন?’
বিরােধীদের অভিযোগ, ৩০৩ আসনে জিতে সংসদকে বিজেপি বুলডােজ করছে। তাই মোদী সরকারকে চাপে ফেলতে অধিবেশনের বাকি দিনগুলোতে সভা বয়কটের ভাবনাচিন্তা করছে তারা। জানা গেছে, সম্মিলিত বিরোধীদের বৈঠকে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। এ বিষয়ে তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক বলেন, ‘আমরা বয়কটের পক্ষে। বিরোধীদের প্রস্তাবও দেব। তারপর সিদ্ধান্ত হবে।’
প্রসঙ্গত, এই অধিবেশনে এই প্রথম বিজেপিকে সম্মিলিতভাবে চেপে ধরতে একজোট হয়ে বৈঠকে বসতে চলেছে বিরােধীরা। পাশাপাশি সরকারের আচরণে ক্ষুব্ধ বিরোধীরা একত্রে লোকসভার স্পিকার এবং রাজ্যসভার চেয়ারম্যানকে একটি প্রতিবাদপত্র দেবে বলে ঠিক হয়েছে। এ ব্যাপারে তৃণমূলের উদ্যোগে রাজ্যসভায় বিরোধী একটি প্রস্তাব পাস করেছে। কোনওরকম স্কুটিনি ছাড়াই বিলের আলােচনা এবং পাশ হয়ে যাওয়ায় তৃণমূল গতকাল রাজ্যসভা থেকে ওয়াক আউট করেছে।
মোদী সরকারের এমন স্বৈরাচারী আচরণের সমালোচনা করে ডেরেক বলেছেন, ‘এটা কি গণতন্ত্র, নাকি মোদীতন্ত্র ? ভারতীয় সংবিধানের রীতি নীতি সবই জলাঞ্জলি দিতে চাইছে! গণতন্ত্রকে খুন করতে চাইছে। সরকারের এই আচরণ কোনওভাবেই মুখ বুজে মেনে নেওয়া হবে না।’ তৃণমূলের আরেক সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় বলেছেন, ‘বিল পেশ, পাশের ক্ষেত্রে সভার যাবতীয় নিয়ম কানুন এর বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছে। এটা গণতন্ত্রের কণ্ঠরােধ।’