দ্বিতীয় মোদী সরকারের প্রথম বাজেট ঘোষণার দিনই ধস নেমেছিল শেয়ার বাজারে। আর তার একদিন পরেই সেই ধস আরও ভয়াবহ চেহারা নিয়ে রীতিমতো ঝাঁকুনি দিয়েছিল লগ্নিকারীদের। তারপর থেকেই দুশ্চিন্তার মেঘে ঢেকেছে লগ্নির আকাশ। শেয়ার কিনতে অনীহা দেখা দেওয়ায় মুখভার বাজারের। ফলে নামছে সূচক। কমছে বিভিন্ন ফান্ডের ন্যাভ।
শুধু তাই নয়। কিছু সংস্থা ঋণপত্রের সুদ মেটাতে না পারায় মানুষের আস্থা কমেছে ডেট ফান্ডে (ঋণপত্র নির্ভর)। সুদ কমছে স্থায়ী আয় প্রকল্পেও। সব মিলিয়ে হঠাৎই যেন ছোট হয়েছে লগ্নির জায়গা। মানুষ কিছুটা দিশেহারা। বিশেষত অবসরপ্রাপ্ত এবং প্রবীণ নাগরিকেরা।
অনেকেরই প্রশ্ন, লাভ করতে এখন কোথায় পুঁজি ঢালা বুদ্ধিমানের কাজ হবে? কিছুটা ভাল রিটার্ন (৭.৭৫%) এবং সুরক্ষার তাগিদে কেউ কেউ আশ্রয় নিচ্ছেন সরকারি বন্ডে (আরবিআই বন্ড)। তবে এখানে সমস্যা হল, ইচ্ছে হলেই প্রকল্প থেকে টাকা তোলা যায় না।
অন্যদিকে, শেয়ার বাজারে অনিশ্চয়তার অন্যতম কারণ— দেশের কোথাও অনাবৃষ্টি, কোথাও অতিবৃষ্টি, বাজারে পণ্যের চাহিদা কমার ইঙ্গিত, বাজেটে অতি ধনীদের আয়ে চড়া হারে সারচার্জ বসায় এক শ্রেণির বিদেশি লগ্নিকারীর ঘোর অসন্তুষ্টি, রফতানি কমা, আমদানি কমে গিয়ে দেশে লগ্নির অভাব স্পষ্ট করা ইত্যাদি।
এই আবহে শুক্রবার সেনসেক্স পড়েছে ৫৬০ পয়েন্ট। বছরের দ্বিতীয় বৃহত্তম পতন। বাজেটের পরের লেনদেনে তা নেমেছিল ৭৯৩। দু’টি পতনের মূল কারণ একটাই। অতি ধনীদের ওপর চড়া হারে সারচার্জ, যা প্রযোজ্য হতে পারে আনুমানিক ৪০ শতাংশ বিদেশি লগ্নিকারীর উপরেও।
এই প্রস্তাব অনুযায়ী, আয় ৫ কোটি টাকার বেশি হলে কর দাঁড়াতে পারে ৪২.৭৪ শতাংশ। বিভিন্ন মহল প্রতিবাদ তোলায়, আশা ছিল সেই প্রস্তাব পুনর্বিবেচিত হবে। কিন্তু শুক্রবার সংসদে অর্থমন্ত্রী পুনর্বিবেচনার সেই প্রশ্ন নেই জানাতেই বাজার পড়ে হয় ৩৮,৩৩৭ পয়েন্টে।
উদ্বেগ বাড়িয়েছে জুনের রপ্তানি ৯.৭ শতাংশ কমাও। তা-ও আবার এমন সব শিল্পে, যেখানে প্রচুর কর্মী নিয়োগ হয়। আবার বর্ষার দেরিতে আসা, অতিবৃষ্টি ও অনাবৃষ্টির কারণে কৃষি উৎপাদন কমার আশঙ্কা রয়েছে। এর জেরে বাড়তে পারে খাদ্যপণ্যের দাম ও কমতে পারে অন্য জিনিসের চাহিদা।