গরুর দুধে শক্তি বাড়ে। আবার গরুর ভজনা করলে ভোটব্যাঙ্কও বাড়ে। এমনকী গরুর পিঠে চড়েই দু’-দুটো লোকসভা ভোট পার করা গেল। তাই গরুদের ‘বিকাশ’ তো করতেই হবে। নাহলে চলবে কী করে! এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘গোমাতাকা বিকাশ’-এরই নির্দেশ দিলেন গেরুয়া শিবিরের সাংসদদের।
সংসদ চললে ফি-হপ্তায় মঙ্গলবার বিজেপির সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। চলতি সপ্তাহের বৈঠকে তাঁর নিদান, মানুষের পাশাপাশি পশুদের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে দলের সাংসদদের। কারণ, বছরের এই সময়েই পশুরা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। তবে পশু বলতে মোদী যে আসলে স্রেফ গরুর কথাই বলতে চেয়েছেন, তা আর বুঝতে বাকি নেই কারও। বিজেপির এক মন্ত্রী যদিও বলছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শুধু গরু নন, মুরগির কথাও বলেছেন।’
বিজেপি সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রীর এ হেন মন্তব্যের পিছনে মূলত সঙ্ঘ শিবিরের চাপ আছে। গত কয়েক দিন ধরেই রাজ্যে রাজ্যে গরুর মৃত্যু হচ্ছে। ‘রাম-নগরী’ অযোধ্যাতেই ৫০ টির বেশি গরুর মৃত্যু হয়েছে। বিজেপি রাজনৈতিক ভাবে গোমাতা-গোমাতা করে লাফালেও বাস্তবে গরুদের দুর্দশায় বিজেপি সরকারের ওপর চটে রয়েছেন সাধু-সন্তরা।
অযোধ্যায় রামের অস্থায়ী পুজোস্থলের মহন্ত সত্যেন্দ্র দাস যেমন বলছেন, ‘বিধায়ক, সাংসদ ও অফিসারেরা গোশালার অবস্থা জানেন। তা সত্ত্বেও গরুকে মৃত্যুর পথে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।’ আবার সরযূকুঞ্জ মন্দিরের পুরোহিত যুগল কিশোরের দাবি, ‘গোশালাগুলিতে পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা করছে না স্থানীয় প্রশাসন। প্রতিকূল আবহাওয়ায় খোলা আকাশের নীচে রাখা হচ্ছে গরুদের।’
এ হেন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের ওপর চটে থাকা সঙ্ঘের মান ভাঙাতে এবং নিজেদের ‘গো-বৎসল’ খেতাব ধরে রাখতেই মোদীর এই দাওয়াই বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।