এনআইএ বিল পাশ হলে তা পোটা বা টাডার মতো অপব্যবহার করা হতে পারে। তাই সন্ত্রাস বিরোধী সংস্থা এনআইএ-কে বেশি ক্ষমতা দিতে আনা বিলের তীব্র বিরোধিতা করলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা তথা প্রধান জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন।
রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্যই এই বিল আনা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ডেরেক। তাঁর আরও অভিযোগ দেশকে পুলিশ রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। ডেরেকের কথায়, ‘জাতীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে নিরপেক্ষ তদন্ত করতে দেওয়া উচিৎ। কোনও ভাবে কোনও ক্ষেত্রেই এই সংস্থাগুলিতে নাক গলানো উচিৎ নয়’। ডেরেকের মন্তব্য, ‘এই বিষয়টিই বারবার ভুলে যাচ্ছেন মোদী-শাহ। তাই এনআইএ বিল আনার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন তাঁরা’।
এনআইএ বিলকে সংসদের স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো উচিৎ বলেও মন্তব্য করেন ডেরেক। পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘২০০৪-২০০৯ সাল পর্যন্ত চর্তুদশ লোকসভায় ৬০ শতাংশ বিল পাশ হয় সংসদীয় কমিটির নিরীক্ষণের পর। এরপর দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারে সেই হার বেড়ে দাঁড়ায় ৭১ শতাংশ। অথচ মোদী জামানার প্রথম পাঁচ বছরে মাত্র ২৬ শতাংশ বিল কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। আর দ্বিতীয় মোদী জামানার সপ্তদশ লোকসভায় এখনও খাতা খুলতে পারেনি সরকার’। সংসদের স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হলে বিল আরও শক্তপোক্ত হয় বলে মত তাঁর। একইসঙ্গে এনআইএ বিলে অস্পষ্ট ভাবে জাতীয় স্বার্থের কথা বলতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন ডেরেক।
রাজ্যসভায় ডেরেক সাফ জানান, ‘সন্ত্রাসের সঙ্গে লড়তে চাইলে পাকিস্তানের অবস্থান জানা জরুরী’। মোদী সরকারের কাছে তাঁর প্রশ্ন, ‘সন্ত্রাস নিয়ে পাকিস্তানের অবস্থান কি’? সন্ত্রাস নিয়ে বিজেপি সরকারের ট্র্যাক রেকর্ড নিয়েও খোঁচা দেন ডেরেক। জম্মু-কাশ্মীরে ২৬০ শতাংশ হারে সন্ত্রাসী হামলা বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘স্বাধীন ভারতের প্রথম সন্ত্রাসবাদী নাথুরাম গডসে। যে হাতে পিস্তল নিয়ে আমাদের সবার প্রিয় গান্ধীকে হত্যা করেছিল’। পাশাপাশি বামপন্থী সন্ত্রাস ও ডানপন্থী সন্ত্রাসের তুল্যমূল্য আলোচনাও করেন তৃণমূলের সাংসদ। জানান, বোমা-বারুদের গন্ধে যে জঙ্গলমহলের বাতাস ভারী হয়ে থাকত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে উন্নয়নের ছোঁয়ায় সেই জঙ্গলমহলের ভোল পাল্টে গেছে। ডেরেকের কথায়, ‘দেশ জুড়ে বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিকদের হত্যা করা হচ্ছে। এটা দক্ষিণপন্থী সন্ত্রাসের উদাহরণ’।