ভারতীয় ক্রিকেটে কোচ রবি শাস্ত্রীর একাধিপত্যের জমানা কি শেষ হতে চলেছে? বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর আর কি বিরাট কোহলিদের কোচ হিসেবে দেখা যাবে শাস্ত্রীকে? ভারতীয় ক্রিকেটের কোচের একাধিপত্য কি চিরতরে যেতে বসেছে? প্রশ্ন উঠছে হাজার কারণ, বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে ভারতের বিদায়ের পরেই ‘টিম ইন্ডিয়া’-র নতুন কোচ ও সাপোর্ট স্টাফ খুঁজতে বিজ্ঞাপন দিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর অবধি শাস্ত্রী-বাঙ্গাররাই যে কোচ থাকছেন, সেটা আগেই স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তবে বর্তমান কোচ রবি শাস্ত্রী সহ ব্যাটিং কোচ সঞ্জয় বাঙ্গার ও বোলিং কোচ ভরত অরুণের ক্ষেত্রে একটা সুবিধে রাখা হয়েছে। সেটা হল, তাঁদের আর নতুন করে আবেদন করতে হবে না। শাস্ত্রীরা সরাসরি এই কোচ নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন। তবে আবেদন করতে না হলেও থাকতে হলে ইন্টারভিউ দিতেই হবে শাস্ত্রীদের। সেই লড়াইয়ে বিদেশের নামী-দামী কোচেরা যেমন থাকবেন, দেশের ক্রিকেট ব্যক্তিত্বরাও থাকবেন। এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, বিরাট কিছু অঘটন না ঘটলে বিরাটদের কোচ হিসেবে নতুন কাউকে দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল।
মঙ্গলবার যে বিজ্ঞাপন বোর্ড দিয়েছে, সেখানে মোট সাতটি পদ রয়েছে। সেগুলি হল, ১) প্রধান কোচ, ২) ব্যাটিং কোচ, ৩) বোলিং কোচ, ৪) ফিল্ডিং কোচ, ৫) ফিজিওথেরাপিস্ট, ৬) স্ট্রেংথ অ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচ, ৭) অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ম্যানেজার। ৩০ জুলাই বিকেল পাঁচটার মধ্যে পাঠাতে হবে আবেদনপত্র। কোচ নির্বাচনের এই প্রক্রিয়া নিয়ে আবার প্রশ্ন তুলেছেন মুম্বই ক্রিকেটের প্রাক্তন তারকা শিশির হাতাঙ্গাদি। তিনি টুইট করেন, “একজন কোচ আবার নতুন করে আবেদন করতে যাবে কেন? যদি সে ভালো কাজ করে, তা হলে তার চুক্তি নতুন করে বাড়বে, না হলে তাকে বলে দেওয়া হবে, তোমার কাছে যা চাওয়া হয়েছে, তা পাওয়া যায়নি”।
ভারতের মতো একটা টিমের কোচ হওয়ার হট সিটে বসতে ক্রিকেট বিশ্বের নামী-দামী তারকারা যে ঝাঁপিয়ে পড়বেন, সেটা বলাই বাহুল্য। আর এখানেই ‘ছাঁকনি’ রেখেছে বোর্ড। যা যোগ্যতামান রাখা হয়েছে অনেক। ব্যাটিং-বোলিং এবং ফিল্ডিং কোচের জন্যও রাখা হয়েছে শর্ত। বয়স ষাটের নীচে হওয়ার পাশাপাশি দেশের হয়ে ১০ টি টেস্ট এবং ২৫ টি ওয়ান ডে ওয়ান ডে খেলতে হবে। বর্তমানে যে দু’জন বিরাট-রোহিতদের ব্যাটিং এবং ফিল্ডিং কোচের দায়িত্বে রয়েছেন, সেই সঞ্জয় বাঙ্গার এবং ভরত অরুণ দেশের হয়ে টেস্ট এবং ওয়ান ডে খেলার শর্ত পূরণ করছেন না। ২০১৭ সালের জুলাই মাসে ভারতের কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন রবি শাস্ত্রী। অনিল কুম্বলে পদত্যাগ করার পর। শাস্ত্রীর কোচিংয়ে ভারত আইসিসির কোনও বড় টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। বিশ্বকাপে ভারত যদি চ্যাম্পিয়ন হত তা হলে শাস্ত্রীকে নিয়ে হয়তো প্রশ্ন উঠত না। আর বিরাটের সমর্থন তো সব সময়ই তাঁর সঙ্গে রয়েছে।