গত রবিবার লর্ডসে বেন স্টোকস ঝড়েই দুরমুশ হয়ে গেছিল নিউজল্যান্ড। ইংল্যান্ড অধিনায়কও স্টোকসকে অতিমানব বলে আখ্যা দিয়েছেন। তবে ছেলের এমন সাফল্যেও অদ্ভুত দোটানায় তাঁর বাবা জেরার্ড স্টোকস। জেরার্ড স্টোকস কিউয়ি বংশোদ্ভূত। এখনও থাকেন সে দেশেই। ফলে নিউজিল্যান্ডের হারে তাঁর মন খারাপ হওয়াই স্বাভাবিক।
অদ্ভুত দোটানায় তিনি। ছেলে বিশ্বকাপ জিতেছে। বাবা হিসেবে খুশিতে ডগমগ হওয়ার কথা। অথচ প্রাণ খুলে হাসতে পারছেন না। আনন্দও করতে পারছেন না! যতই হোক, দেশের জন্যে টান থাকাই স্বাভাবিক। আবার অন্যদিকে ছেলের এমন সাফল্যেও ইচ্ছে করছে মন খুলে আনন্দ করতে। তাই ঠিক কী করা উচিত এই মুহূর্তে বুঝে উঠতে পারছেন না জেরার্ড। বলেছেন, ‘হ্যাঁ ব্ল্যাক ক্যাপসদের জন্য মন খারাপ। তবে হৃদয়ে যদি হাত রেখে সত্যি কথা বলতে হয় তা হলে স্বীকার করছি, হ্যাঁ আমি বেন–এর জন্য খুশি। ওর দলের জন্যও খুশি। কিন্তু তাই বলে নিউজিল্যান্ডকে সমর্থন করা ছেড়ে দিলাম, এরকম নয়। আমি আগেও কিউয়িদের সমর্থক ছিলাম। আজও আছি। কালও তাই থাকব।’
ফাইনালে ছেলে ম্যাচের সেরা। ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ছেলের সঙ্গে কথা হয়েছে? জেরার্ড স্টোকস বলেছেন, ‘বেন যেভাবে ব্যাট করেছে, তা সত্যিই প্রশংসা করার মতো। কাপ জেতার জন্য সেদিন দুটো দলই প্রচণ্ড পরিশ্রম করেছে। ছেলে তো এই ম্যাচে অংশ নিতে এবং দলকে সাহায্য করতে পেরে গর্বিত। ওর কথা শুনে মনে হচ্ছিল, হাতে যেন চাঁদ পেয়েছে।’
বেন স্টোকসের মা ডেব স্টোকসও রবিবার রাতে অদ্ভুত এক রোমাঞ্চ অনুভব করেছেন বিশ্বকাপ ফাইনাল দেখার সময়। বলেছেন, ‘জানেন খেলা শেষ হওয়ার পর নিজেকে সামলাতে পারিনি। কেঁদে ফেলেছিলাম। ব্ল্যাক ক্যাপসদের জন্য খুব খারাপ লেগেছে। উইলিয়ামসনরা সবটুকু দিয়েছিল। সেদিন দুটো দলকে যুগ্ম বিজয়ী ঘোষণা করলেই ভাল হত।’
বেন স্টোকসের যখন বারো বছর বয়স তখন ইংল্যান্ডে সপরিবার চলে গিয়েছিলেন জেরার্ড স্টোকস। কিন্তু ২০১৩ সালে জেরার্ড আর তাঁর স্ত্রী ডেব ফিরে আসেন ক্রাইস্টচার্চে। বেন রয়ে যান ইংল্যান্ডে। এই যে অনেকেই বলছেন বিশ্বকাপ ফাইনাল টাই হওয়ার পর যুগ্মবিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করতে হত ইংল্যান্ড আর নিউজিল্যান্ডকে। তিনিও কি একইরকম মনে করেন? জেরার্ড স্টোকসের জবাব, ‘ড্র বা টাই ব্যাপারটা ভাল। তবে বিশ্বকাপ ফাইনালে যুগ্ম বিজয়ীর থেকে যে কোনও একটি দল চ্যাম্পিয়ন হওয়া অনেক বেশি ভাল।’