কেন কাজ করেনি মেট্রোর ডোর সেন্সর? যাত্রীর হাত আটকে রয়েছে জেনেও কেন ট্রেন থামাননি চালক? গত শনিবার কলকাতা মেট্রোর দরজায় আটকে যাত্রীর মৃত্যু ঘিরে এমনই নানা প্রশ্ন এবং বিভিন্ন মহলের সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে। এর মধ্যে দুর্ঘটনায় নিহত সজল কাঞ্জিলালের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের মৌনতা নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠছিল। মঙ্গলবার এই নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি-র তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্ভব নয়! যার ফলে ফের উঠেছে সমালোচনার ঝড়।
প্রসঙ্গত, গতকাল ছিল সজল কাঞ্জিলালের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান। সকালে মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ মেট্রো আধিকারিকরা তাঁর বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। মেট্রো কর্তৃপক্ষকে সামনে পেয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন পরিবারের সদস্যরা। সূত্রের খবর, পরিবারের তরফে মৃতের এক ভাইপোকে চাকরি ও ক্ষতিপূরণের আর্জি জানানো হয়। কিন্তু তখনই মেট্রো কর্তাদের তরফে তদন্ত রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কোনও ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্ভব নয় বলে স্বজনহারা পরিবারকে জানিয়ে দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত শনিবার সন্ধ্যা ৬.৪০ মিনিট নাগাদ পার্কস্ট্রিট স্টেশনে কবি সুভাষগামী ট্রেনে ওঠার সময় মেট্রোতে উঠতে গিয়ে দরজায় হাত আটকে যায় ৬৬ বছর বয়সী সজল কাঞ্জিলালের। তাঁর দেহ তখন ট্রেনের বাইরে। সেই অবস্থাতেই ট্রেন চলতে শুরু করে। ট্রেন টানেলে ঢোকার পরে পাশের দেওয়ালে ধাক্কা খেয়ে থার্ড লাইনে পড়ে মৃত্যু হয় তাঁর। মৃতের পরিবারের তরফে মেট্রো কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে সেই ঘটনার পরে ৩ দিন কেটে গেলেও দুর্ঘটনার কোনও দায় স্বীকার করেনি মেট্রো কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে, এই ঘটনা নিয়ে নিজের ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কলকাতা মেট্রো চূড়ান্ত অব্যবস্থার শিকার বলে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা…কলকাতায় মেট্রো রেল সবচেয়ে অবহেলিত।’