আর মাত্র কয়েকদিন। তারপরই উড়বে লাল-হলুদ পতাকা বিশ্বজুড়ে। শতবর্ষে পা দেবেন বিশ্বের ঐতিহ্য ভরা এই ক্লাব। ক্লাবটার নাম যদি হয় ইস্টবেঙ্গল তবে তা নিয়ে উত্তেজনা তো আলাদা থাকবেই স্বাভাবিক। আর তার শতবর্ষ নিয়ে আলাদাই উন্মাদনা থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। আবেগের বিস্ফোরণ ঘটতে চলেছে পৃথিবীর প্রায় ১০০ টি শহরে।
ঢাকা থেকে ডাবলিন, মিউনিখ থেকে হ্যামিলটন, নাইরোবি থেকে টোকিও, সাওপাওলো থেকে সিডনি—উড়বে লাল-হলুদ পতাকা। জ্বলবে মশাল। উদযাপিত হবে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের শতবর্ষ। পশ্চিমবঙ্গে ফুটবল নিয়ে যে উন্মাদনা আছে তা অনেক জায়গায় নেই। আর সেইখানে যদি ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের মতো ক্লাব থাকে তাহলে তো কথাই নেই।
দেশভাগের পর ওপার বাংলা থেকে দলে দলে বাঙালি এসে জড়ো হয় এপার বাংলায়। ছিন্নমূল হয়ে বেঁচে থাকার এক লড়াই ছিল তাঁদের মধ্যে। নিজেদের অস্তিত্ব প্রতিষ্ঠা করার জন্য চলেছে লড়াই। সব ক্ষেত্রেই নিজেদেরকে তুলে ধরার জন্য প্রতি মুহূর্তে চলেছে লড়াই। আর এই লড়াইয়ের মানুষগুলোকে কেন্দ্র করে যদি এক ফুটবল আবেগ তৈরি হয়, আর সেই ক্লাবের নাম যদি হয় ইস্টবেঙ্গল তবে লড়াই আর আবেগের গল্প তো থাকবেই। সেই ক্লাবের শতবর্ষের উদযাপনে অভিনবত্ব থাকবে সেটা বলার অবকাশ রাখে না।
চমকে ভরা উদযাপন অনুষ্ঠান বিশ্বব্যাপী। পৃথিবীর কোণায় কোণায় ছড়িয়ে থাকা ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা তাঁদের শহরে ক্লাবের পতাকা তুলবেন ৩-৪ অগস্ট। এশিয়ার জাপান, ইন্দোনেশিয়া, আফ্রিকার জাম্বিয়া, ঘানা, আমেরিকা নিউ ইয়র্ক, ফিলাডেলফিয়া, নিউ জার্সির মতো একাধিক শহর, লাতিন আমেরিকার ব্রাজিলের সাওপাওলো ও ইউরোপের প্যারিস, মিউনিখ, আমস্টারডাম-সহ ১০০টি শহরে উড়বে লাল-হলুদ পতাকা।
৩ অগস্ট ঢাকায় উঠবে প্রথম পতাকা। তারপরের ভারতের বিভিন্ন শহরে। এ দেশের পর আবুধাবি, দুবাই, বাহারিনে হবে পতাকা উত্তোলন। এরপর আফ্রিকার একাধিক দেশ, ইউরোপ, আমেরিকা এবং লাতিন আমেরিকায় উঠবে পতাকা। প্রতিটি জায়গাতেই স্থানীয় সময় দুপুর বারোটায় এই কর্মসূচি হবে। জাপান, মালেশিয়া, সিঙ্গাপুর, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ায় হবে ৪ অগস্ট।
ক্লাব কর্তারা প্রতিদিন প্রায় বৈঠক করছেন শতবর্ষ উদযাপনের পরিকল্পনা নিয়ে। আসার কথা কপিল দেবের। এক বছর ধরে চলবে কর্মসূচি। ২৮ জুলাই জোড়াবাগান থেকে ক্লাব তাঁবু পর্যন্ত হবে বর্ণাঢ্য পদযাত্রা। অন্যদিকে লেসলি ক্লডিয়াস সরণি থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে থাকা সমর্থকরাও পিছিয়ে নেই। আর এই উদ্যোগ নিয়েছে ইস্টবেঙ্গল দ্য রিয়েল পাওয়ার (ইবিআরপি) এবং ব্রিটেনের বেঙ্গল হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের (বিএইচ এফ) উদ্যোগে নেওয়া হয়েছে এই গ্লোবাল ফ্ল্যাগ হোয়েস্টিং-এর পরিকল্পনা। এই আবেগ, এই চমক প্রতিটি মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। এপার বাংলায় থাকা বাঙালদের লড়াইয়ের প্রতীক হিসেবে জ্বলে ওঠা মশাল বিশ্বের কোণায় কোণায় আলো দেবে।