৭ দফায় বঙ্গে শেষ হয়ে যাবে তৃণমূল। এই ছিল বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের হুঁশিয়ারি। কিন্তু মুকুলের সেই হুঁশিয়ারির পর সময় গড়িয়েছে কিন্তু দফা আর এগোয়নি। বরং তৃণমূল ভাঙিয়ে মুকুল রায় যে কাউন্সিলরদের বিজেপিতে এনেছিলেন, তাঁদের অনেকেই দলকে চরম অস্বস্তিতে ফেলে পুরনো দলে ফিরে যেতে শুরু করেছেন। এই পরিস্থিতিতে আর নিজেদের বিড়ম্বনা বাড়াতে চাইছে না গেরুয়া শিবির। তাই মুখ পোড়ার ভয়ে এবার মুকুলের হাত ধরে নতুনদের দলে যোগদান কর্মসূচী বাতিল করে দিলেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সোমবার দলের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায়ও জানিয়ে দেন, রাজ্য নেতৃত্বের অনুমোদন ছাড়া দিল্লীতে গিয়ে যোগদান আর চলবে না।
প্রসঙ্গত, বিজেপিতে সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) পদটি আরএসএস-বিজেপির সেতুবন্ধের কাজ করে। লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে লাগাতার যে ভাবে বিজেপিতে যোগদান হয়েছে তাতে আগেই আপত্তি জানিয়েছেন এ রাজ্যের বিজেপি নেতারা। তাঁদের কথায়, যাঁদের সঙ্গে দল বা সংগঠনের নীতি-আদর্শের কোনও যোগ নেই তাদের দলে নিয়ে কতটা এগনো সম্ভব? পাশাপাশি আপত্তি জানিয়েছিল আরএসএসও। কিন্তু তাও ধোপে টেকেনি। মুকুল রায়ের জাদুতে বিধায়ক, কাউন্সিলর থেকে পঞ্চায়েত প্রধান, দলে দলে যোগদান করতে থাকেন বিজেপিতে। তবে রাজ্য বিজেপি নড়েচড়ে বসে লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলামের যোগদানের পর।
যাঁর বিরুদ্ধে লাগাতার বিজেপিকে চরম নির্যাতন করার অভিযোগ, তাঁকে দলে টেনে ফেঁসে যান মুকুল রায়। তীব্র প্রতিক্রিয়া হয় বিজেপি নেতৃত্ব ও কর্মীদের মধ্যে। এরপরই রাজ্যে নেতৃত্ব স্তরে যোগদানের ক্ষেত্রে ৩ সদস্যের কমিটির ছাড়পত্র থাকা বাধ্যতামূলক বলে জানানো হয় রাজ্য বিজেপির তরফে। আর তারপরই তৃণমূলে ফেরা শুরু করেন কাঁচরাপাড়া ও ভাটপাড়ার কাউন্সিলররা। ফলে অস্বস্তি চরমে পৌঁছয়। এই পরিস্থিতিতে মুকুলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে রাজ্য বিজেপি নেতারা বলছেন, মুকুল রায়ের দলভাঙানোর খেলায় দলে অরাজকতা তৈরি হচ্ছে। রাজ্য নেতৃত্ব এমনকী রাজ্য সভাপতির অজ্ঞাতেই দিল্লীতে নিয়ে গিয়ে একাধিক বিধায়ক, কাউন্সিলরকে দলবদল করিয়েছেন মুকুল।