দ্রুত নেমে চলেছে জলস্তর। এদিকে প্রয়োজনের তুলনায় অত্যাধিক পরিমাণে ব্যবহারের জেরে ক্রমাগত হচ্ছে জল অপচয়। সমস্যার সমাধান খুঁজতে এবার রাজ্যবাসীকে জল সংরক্ষণ সম্পর্কে সচেতন করার উদ্দেশ্যে শুক্রবার পথে নামলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পদযাত্রা শেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেয়ো রোডে বক্তব্য পেশ করেন। জল সংরক্ষণের গুরুত্ব প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান, কীভাবে তিনি বিদ্যুত বাঁচান। মমতার কথায়, ‘আমাদের বাড়িতে এসে আত্মীয়রা বলেন, দিদি তুমি পুরো ঘর অন্ধকার করে রাখো। তুমি কি কিপটে? আমি বলি, কিপটের বিষয় নয়। আমার ঠিক যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু ব্যবহার করব’।
প্রতি বছর ১২ জুলাই দিনটি ‘জল বাঁচাও, জীবন বাঁচাও দিবস’ হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলা সরকার। দিনটির তাৎপর্য তুলে ধরতে শুক্রবার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি থেকে গান্ধী মূর্তির পাদদেশ পর্যন্ত পদযাত্রায় নেতৃত্ব দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গী হলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, কবি সুবোধ সরকার, অভিনেতা শোহম-সহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের বিশিষ্ট প্রতিনিধিরা। পদযাত্রার আগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে জল সংরক্ষণে যাঁরা উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন, তাঁদের স্বীকৃতি ও সংবর্ধনা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নীতি আয়োগের রিপোর্ট বলছে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে দেশের বিভিন্ন অংশে ভূগর্ভস্থ জলের ভান্ডার ফুরিয়ে যাবে এর জেরে চেন্নাই, হায়দরাবাদ, দিল্লী-সহ একাধিক শহরে তীব্র জল সংকট দেখা দেবে। তালিকায় রয়েছে কলকাতাও। শহরের একাধিক ট্যাপ কলের মুখ খোলা থাকে। তা থেকে ক্রমাগত জল বেরিয়ে যায়। ফলে বিপুল পরিমাণ জল নষ্ট হয়।
পাশাপাশি, সাধারণ মানুষের মধ্যেও জল অপচয়ের প্রবণতা রয়েছে। তা রুখতে টালা এলাকায় জলমিটারও বসিয়েছে কলকাতা পৌরনিগম। দক্ষিণ কলকাতার টালিগঞ্জ, চেতলাতেও জলমিটার বসানোর পরিকল্পনা চলছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আগেভাগে সচেতন না হলে খুব শীঘ্রই ভূগর্ভস্থ জলের ভান্ডার ফুরিয়ে যাবে। জলের জন্য হাহাকার হবে। তাই জল সচেতনতা বাড়াতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এদিনের পদযাত্রা।