বেসরকারিকরণ মানেই তা খারাপ না। চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানার বিষয়ে কেন্দ্র যা করতে চাইছে তাতে ভালই হবে। আসানসোলের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ের এমন মন্তব্যের প্রতিবাদে এবার সরব হল নানা দল ও শ্রমিক সংগঠন। বাবুলের প্রতি ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে তাঁদের দাবি, হিন্দুস্তান কেবলস এবং বার্ন স্ট্যান্ডার্ড, এই দুই কারখানা বন্ধের প্রভাব পড়েছে শিল্পাঞ্চলে। এর পরে চিত্তরঞ্জন কারখানা (সিএলডব্লিউ) বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া হলে জেলার অর্থনীতিতে ধাক্কা লাগবে।
সম্প্রতি রেলবোর্ডের তরফে সিএলডব্লিউ ‘কর্পোরেট’ করার বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তির কথা জানার পরেই এর প্রতিবাদে শ্রমিক সংগঠনগুলি আন্দোলনে নামে। তাদের দাবি, কর্পোরেট করার নামে কারখানাকে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এরই মধ্যে বুধবার রাতে আসানসোলে এসে এলাকার বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল দাবি করেন, সিএলডব্লিউ নিয়ে তিনি বৈঠক করেছেন। পিপিপি মডেল গোটা দুনিয়ায় জনপ্রিয় হয়েছে। এখানেও সেই ভাবনা আনা হচ্ছে।
এরপরেই ‘সেভ সিএলডব্লিউ জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি’র আহ্বায়ক সৌমেন দাস জানান, তাঁরা সাংসদের বক্তব্য মানছেন না। সিটু নেতা রাজীব গুপ্ত, আইএনটিইউসি নেতা স্বপন লাহারা জানান, আন্দোলন আরও তীব্র করা হচ্ছে। ১৪ জুলাই কারখানার কর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দারা কারখানার ৩ নম্বর রেলগেট থেকে মিহিজাম পর্যন্ত মিছিল করবেন। স্থানীয় ব্যবসায়ী বাবু রুজের বক্তব্য, ‘এই অঞ্চলে ভরসা ছিল হিন্দুস্তান কেবলস এবং চিত্তরঞ্জন রেল কারখানা। দু’বছর আগে তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এলাকার অর্থনীতি অর্ধেক পঙ্গু হয়েছে। এবার রেল কারখানার ওপরে আঘাত আসতে চলেছে। আমরা তা সমর্থন করি না।’
জেলা পরিষদের ক্ষুদ্র শিল্প বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ আরমানের বক্তব্য, ‘এই কারখানার ওপরে এলাকায় অনেক ক্ষুদ্র শিল্প নির্ভরশীল। রাজ্য সরকারের তরফে বেকারদের ঋণ দিয়ে স্বনির্ভরতায় উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। এখন কারখানা বন্ধ বা বেসরকারিকরণের পথে হাঁটলে তা ধাক্কা খাবে। সাংসদের বক্তব্যের বিরোধীতা করছি আমরা।’ বারাবনির তৃণমূল বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়েরও দাবি, ‘আমরা সাংসদের কথা মানি না। ইতিমধ্যে আন্দোলন শুরু করেছি। বিধানসভার অধিবেশনেও প্রসঙ্গটি তুলে রাজ্য জুড়ে এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করব।’ সবমিলিয়ে নিজের বক্তব্যের জন্য এবার বেজায় বিপাকে পড়েছেন বাবুল।