শুক্রবার থেকেই খুলে যাবে বাইপাস থেকে বিমানবন্দরগামী ফ্ল্যাঙ্ক। সব মিলিয়ে মোট আটটি ফাটল ধরা পড়েছে। মোটামুটিভাবে মাস দুয়েক সময় লাগতে পারে সম্পূর্ণ মেরামতে। তবে ফাটল মেরামতে ‘ক্রপ’গুলি পাওয়া গেলে দশ-বারো দিনেই উড়ালপুল দিয়ে পুরোপুরিভাবে যান চলাচল করানো যেতে পারে। না হলে ‘ক্রপ’ তৈরি করতে ও লাগাতে মাস দুয়েক সময় লাগবে। সেক্ষেত্রে ওই সময় জুড়ে যান চলাচলের সুবিধায় কাজ করবে বেইলি ব্রিজ। মাঝেরহাটের ক্ষেত্রেও এই ধরনের ব্রিজ বানানো হয়। ভূমিস্তরে যাতায়াতে বেইলি ব্রিজ তৈরিতে দশ দিন সময় লাগতে পারে। উড়ালপুল মেরামতের কাজ করবে নির্মাণকারী সংস্থা রাজ্য সরকারেরই ম্যাকিনটস বার্ন। বৃহস্পতিবার কেএমডিএ-র বৈঠকে উল্টোডাঙা উড়ালপুলের বিষয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উড়ালপুলে ফাটলের অংশ পরীক্ষাকারী দলে ছিলেন রাজ্য সরকারের ব্রিজ অ্যাডভাইসরি কমিটির সদস্য অমিতাভ ঘোষাল এবং সমীরণ সেন। সঙ্গে ছিলেন কেএমডিএ-র সিইও অন্তরা আচার্য। ব্রিজের কংক্রিটের শক্তি পরীক্ষা করার জন্য আল্ট্রা সাউন্ড ভেলোসিটি পরীক্ষাও করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা, দুর্ঘটনার পর উড়ালপুল মেরামত করার সময় লাগানো দু’টি লোহার স্তম্ভের কারণেই ওই ফাটল। আচমকা গুরুত্বপূর্ণ এই উড়ালপুলে ফাটল দেখা যাওয়ায় তিন দিন ধরে বন্ধ রাখা হয়েছে উল্টোডাঙার উড়ালপুল। অফিস টাইমে বাইপাসে এর জন্য তীব্র যানজট হচ্ছে। একটি লেন অন্তত চালু হলে এই জট কিছুটা কম হবে। অন্য লেনের ক্ষেত্রে বেইলি ব্রিজ তৈরির পর সমস্যা অনেকটাই মিটে যাবে।
উল্টোডাঙা উড়ালপুল দ্রুত মেরামত করে যাতায়াতের জন্য খুলে দিতে ইঞ্জিনিয়ার ও পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন নগরোন্নয়ন দফতরের সচিব। তার আগে বৃহস্পতিবার বিশেষজ্ঞদের দল গোটা উড়ালপুল পরিদর্শন করে। পরে সন্ধ্যায় নগরোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “আজ থেকেই একটি লেন খুলে দেওয়া হচ্ছে। সেই লেনে কোনও ত্রুটি নেই। ‘ক্রপ’ খুঁজতে নির্মীয়মাণ সংস্থাগুলির সঙ্গে যোগাযোগও শুরু করে দিয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার-আধিকারিকরা। বিজ্ঞাপনও দেওয়া হবে। ডিজাইনে যে সামগ্রী দেওয়ার কথা ছিল, তার থেকে কম উন্নত মানের সামগ্রী দিয়ে তৈরি করার ফলেই সমস্যা বলে মনে করা হচ্ছে। ম্যাকিনটস বার্ন সংস্থাই এই উড়ালপুল তৈরি করেছিল। তারাই মেরামতের কাজ করবে।”
আটটির মধ্যে একটি ফাটল নিয়ে চিন্তিত বিশেষজ্ঞরা। ওই ফাটলটি উড়ালপুলের পূর্ব দিকের পেয়ারের কাছে। ২০১৩ সালে ওই উড়ালপুলের যে দু’টি স্তম্ভের মাঝের অংশ খুলে পড়ে গিয়েছিল, সেই দু’টি স্তম্ভের একটির ‘পেয়ার ক্যাপ’-এ ফাটলটি দেখা গিয়েছে। ২০১৩ সালে ঠিক বর্তমানে যে অংশে লোকাল ক্র্যাক দেখা গিয়েছে, সেই অংশ ভেঙে পড়ে। কেন বারবার একই অংশে ফাটল, কেন ওই অংশ উড়ালপুলের ভার বহন করতে অক্ষম, তা পরীক্ষা করে দেখা হবে।