শুধু ভারতে কেন, গোটা বিশ্বেই বিজেপির মতো এত দুর্নীতিগ্রস্ত এবং ধনী দল আর দুটি নেই। উপযুক্ত তথ্য-সহ গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে এবার এমনই অভিযোগ তুলল তৃণমূল। বিজেপির জমা দেওয়া আয়কর রিটার্ন এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এডিআর (অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস)-এর দেওয়া তথ্য প্রকাশ করেই পদ্মশিবিরকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। আর এ নিয়ে কোনও মন্তব্য না করে, মুখে কুলুপ এঁটেছে বিজেপি।
মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলন করে তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা তথা প্রধান জাতীয় মুখ্য মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেছেন, ‘গোটা বিশ্বে বিজেপির মতো দুর্নীতিগ্রস্ত ও ধনী দল আর নেই।’ তাঁর অভিযোগ, ২০১৬ সালে নোট বাতিলের পর বিজেপির সম্পত্তি বেড়েছে ৮১ শতাংশ। ৫৭০ কোটি থেকে একলাফে তাদের সম্পত্তির পরিমাণ হয়েছে ১০৪০ কোটি। নির্বাচনী বন্ডের ৯৫ শতাংশ ঢুকেছে বিজেপির তহবিলে। প্রতি এক লক্ষ টাকা কর্পোরেট অর্থ সাহায্যের ৯২ হাজার টাকা পেয়েছে বিজেপি।
শুধু তাই নয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রত্যক্ষ ও অপ্রত্যক্ষ বিজ্ঞাপন দেওয়ার নিরিখেও সব দলকে পেছনে ফেলে শীর্ষস্থানে তারা। তৃণমূলের অভিযোগ, লোকসভা নির্বাচনের আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় মোট বিজ্ঞাপনের ৮০ শতাংশই বিজেপির। এমনকী, ‘সারোগেট বিজ্ঞাপন’ও দিয়েছেন মোদী-শাহরা। এছাড়াও এফসিআরএ বা ফরেন কন্ট্রিবিউশন (রেগুলেশন) অ্যাক্ট অনুযায়ী বিপুল পরিমাণ ‘কালো টাকা’ ঢুকেছে বিজেপির তহবিলে। অভিযোগের পাশাপাশি তৃণমূল এ প্রশ্ন তুলেছে, বিদেশ থেকে টাকা পাঠান ব্যক্তি বা সংস্থাগুলি কারা? জনগণের সামনে সেই তথ্য তুলে ধরুক গেরুয়া শিবির।
উল্লেখ্য, গতকাল ডেরেকের সঙ্গে ছিলেন দলের নেতা তথা সাংসদ ডাঃ মানস ভুঁইয়া, ডাঃ শান্তনু সেন, মালা রায়, আবিররঞ্জন বিশ্বাস এবং আহমেদ হাসান ইমরান। তাঁদের অভিযোগ, আয়কর রিটার্নের তথ্য অনুযায়ী, কর্পোরেট ফান্ডিং হিসেবে বিজেপি মোট ৪২০০ কোটি পেয়েছে। আগে যে কোনও কোম্পানি তাদের লভ্যাংশের সর্বোচ্চ ৭.৫ শতাংশ কোনও রাজনৈতিক দলকে দান করতে পারত। বিজেপি সরকার সেই ঊর্ধ্বসীমা তুলে দিয়েছে। তা কার স্বার্থে? এর লক্ষ্য কী? প্রশ্ন তৃণমূলের।
এই প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি পুরনো দাবি তুলে ধরে দলের নেতারা বলছেন, ১৯৯৫ সালে ‘জনতার দরবার’ বইয়ে নির্বাচনী সংস্কারের দাবি তুলেছিলেন মমতা। তারপর ’৯৮-এ তিনি তৃণমূল দল গড়েছেন। দলের প্রথম ইস্তাহারেও নির্বাচনী সংস্কারের দাবি ছিল। তৃণমূল তরফে ডেরেক আরেকটি বিষয়েও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তিনি বলেন, ‘অজ্ঞাত ব্যক্তি বা সংস্থা থেকে বিজেপির তহবিলে ৩৪২ কোটি টাকা ঢুকেছে। তৃণমূলের ক্ষেত্রে এমন তহবিলের পরিমাণ মাত্র ১০ লক্ষ টাকা।’