লোকসভা ভোটের আগে ও পর থেকেই রাজ্যের বিধায়ক ও মন্ত্রীদের দলবদলের হিড়িক শুরু হয়েছিল। একের পর এক হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীরা এইসময় তৃণমূল ছেড়ে নাম লিখিয়েছেন বিজেপিতে। যদিও মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, যাঁদের যাওয়ার চলে যেতে পারেন। দল কাউকেই আটকাবে না। ইতিমধ্যেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন বহু বিধায়ক। তবে এবার তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার পথে এগুলো তৃণমূল কংগ্রেস।
দল ছেড়ে যাওয়া বিধায়কদের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইন প্রয়োগের ভাবনা চিন্তা শুরু করেছে শাসকদল তৃণমূল। বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনের শেষে এহেন পদক্ষেপ তাঁরা নিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, দল ছেড়ে যাওয়া বিধায়কদের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইন প্রয়োগের ব্যাপারে ইতিমধ্যে প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর থেকে এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের সাতজন বিধায়ক দফায় দফায় শিবির বদল করেছেন। শুধু তৃণমূল না, কংগ্রেস ও বাম শিবির থেকেও বিধায়করা গিয়েছেন বিজেপিতে।
শাসকদল তৃণমূলের এই ইস্যুতে বাড়তি চাপ বাড়াতে মরিয়া বিরোধীরা। কারণ ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে বহু কংগ্রেস এবং বাম বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিয়েছে। সেক্ষেত্রে এই সমস্ত বিধায়কদের বিরুদ্ধেও দলত্যাগ বিরোধী আইন প্রয়োগের দাবি করেছে বাম ও কংগ্রেস পরিষদীয় দল। এই নিয়ে আদালতের দ্বারস্থও হয়েছে কংগ্রেস। এই পরিস্থিতিতে শাসকদল তৃণমূল কি সিদ্ধান্ত নেয় সেটাই এখন দেখার।
সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর অনুযায়ী, তৃণমূল শিবিরে যাওয়া বাম-কংগ্রেস বিধায়কদের বিধানসভার অভ্যন্তরে এখনও তৃণমূলের বিধায়ক হিসেবে ধরা হয় না। কাগজে কলমে তাঁরা এখনও বাম ও কংগ্রেসের বিধায়ক। তাই এই দলছুটদের অধিকাংশই বাম ও কংগ্রেসের বেঞ্চে এখনও বসেন। যদিও এই দলছুটদের মধ্যে শঙ্কর সিংহ-সহ কয়েকজন বিধায়ক শাসকদলের পদে রয়েছেন। সেই বিধায়কদের তাঁদের বর্তমান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে কি না, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। এই অবস্থায় তৃণমূল ছেড়ে যাওয়া বিধায়কদের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইন প্রয়োগ হবে কিনা তা নিয়ে ধন্ধ তৈরি হয়েছে।
কারণ এই আইন প্রয়োগ এক ধাক্কায় অনেকগুলো জায়গায় উপনির্বাচন হবে। ইতিমধ্যে করিমপুর, কালিয়াগঞ্জ, খড়গপুর বিধানসভার উপনির্বাচন বাকি রয়েছে। যেভাবে বাংলায় গেরুয়া রাজনীতি শুরু হয়েছে, তাতে এই পরিস্থিতিতে বাই-ইলেকশন হলে কি হবে তা নিয়েও একটা ধোঁয়াশা রয়েছে শাসকদলের অন্দরে। তবে সমস্তদিক খতিয়ে বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, এমনটাই জানা গেছে।