জ্বালানি আর দামি ধাতুর উপর অতিরিক্ত কর চাপিয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির অসন্তোষের কারণ হলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। অর্থনীতিবিদদের একাংশও মনে করছেন, তাঁর এই পদক্ষেপের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় দেশবাসীকে মুদ্রাস্ফীতির মুখে পড়তে হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মুদ্রাস্ফীতি দেশের মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত এবং দরিদ্রদের শুধু যে আর্থিকভাবে বিপন্ন করে তুলবে, তা নয়, দেশের গড় জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধিতেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ভারত যেখানে ২০২৫ সালের ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে, সেখানে লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে এই বৃদ্ধির হার কমে যাওয়া একেবারেই কাম্য নয়। এদিকে পেট্রল-ডিজেলের দাম বাড়লে তার সরাসরি প্রভাব পড়বে এই বৃদ্ধিতেই। সুতরাং ২০২৫ সালে ভারতকে পাঁচ ট্রিলিয়নের অর্থনীতি হতে হলে যেখানে কম করে ৮-৮.৫ শতাংশ বৃদ্ধির হার রাখতে হবে সেখানে মুদ্রাস্ফীতি সেই হার বজায় রাখতে বাধা দিতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা।
জ্বালানি ছাড়াও ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের নতুন বাজেটে দাম বেড়েছে সোনা, রুপো এবং অন্যান্য বহুমূল্য ধাতুর। এইসব বহুমূল্য ধাতুর আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২.৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। আর সেই প্রস্তাবেরই সার্বিক বিরোধিতা করেছে স্বর্ণকার ও স্বর্ণব্যবসায়ীদের সংগঠনগুলি। তারা সরকারকে অনুরোধ করেছে অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিতে। অল ইন্ডিয়া জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিল জানিয়েছে, ‘বিষয়টি খুবই হতাশাব্যাঞ্জক এবং দুর্ভাগ্যজনক। জিএসটির সঙ্গে যদি সোনার উপর বর্ধিত অন্তঃশুল্কও জুড়ে যায় তবে সোনার আরও বহুমূল্য হবে। এতে সোনা পাচারকারীরা উৎসাহিত হবে। তাদের প্রভাব প্রতিপত্তি বাড়বে। আর আইন মেনে যাঁরা ব্যবসা করেন তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। সরকার যে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন, এই সিদ্ধান্ত মোটেই তাকে উৎসাহিত করে না।‘ একই মত ইন্ডিয়ান গোল্ড পলিসি সেন্টার আইআইএম-এর চেয়ার পার্সন অরবিন্দ সহায়েরও। সোনা দুর্মূল্য হলে যে সোনা পাচারকারীরা উৎসাহিত হবে, সে ব্যাপারে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনিও। তিনি বলেছেন, এর প্রভাব সার্বিকভাবে পড়বে ভারতের গয়না শিল্পের উপর।
