লোকসভা ভোটে কিছুটা আসন বৃদ্ধি পেতেই অত্যধিক বাড়বাড়ন্ত বিজেপির৷ জয় শ্রী রাম ধ্বনিকে আঁকড়ে ধরে বাংলা জুড়ে সন্ত্রাস চালাচ্ছে তাঁরা৷ আর কেউ জয় শ্রী রাম বলতে না চাইলেই তাঁকে মারধর করা হচ্ছে৷ এবার বিজেপির এই স্বৈরাচারী নীতির বিরুদ্ধে গর্জে উঠল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়৷ জয় শ্রী রাম না বলার দাবি নিয়ে পথে নামলেন তাঁরা৷
জয় শ্রী রাম বলব না, হিন্দু রাষ্ট্র হতে দেব না’ এই দাবী নিয়েই পথে নামলেন ওঁরা। ওঁরা কিছু ‘সংখ্যালঘু’ মানুষ যারা বলতে চাইছেন, মান আর হুঁশ থাকলে তাঁরা ‘জয় শ্রী রাম বলবেন না, ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র হতে দেবেন না’।
এই বার্তা সমস্ত মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে কলকাতার হাজরা মোড়ে হাজির হয়েছিলেন তাঁরা, সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী সরকারের সময়ে ঘটে যাওয়া একের পর এক ধর্মীয় ঘটনার জেরে বিভিন্ন মানুষের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনার প্রমাণ।
এদিনের পথ সভায় উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখেন সুজাত ভদ্র, সারুর আলমরা। মঞ্চের পাশে প্রতীকী হিসাবে তুলে ধরা হয় তাবরেজ আনসারির মর্মান্তিক ঘটনা। ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা তাবরেজ আনসারিকে চোর তকমা দিয়ে ল্যাম্পপোস্টে বেঁধে অকথ্য অত্যাচার করার সময়ে জোর করে ‘জয় শ্রী রাম’ বোলানোর চেষ্টা হয়।
২২ জুন, জয় শ্রী রাম বলতে অস্বীকার করায় শিয়ালদহগামী ক্যানিং লোকালে এক দল কট্টরবাদীদের হাতে আক্রান্ত হন শাহারুখ হালদার নামে এক ব্যক্তি। নির্মমভাবে মারধোর করার ঘটনা ঘটে ট্রেনের মধ্যেই। সেই ঘটনার প্রসঙ্গও এদিনের সভায় বার বার উঠে এসেছে।
সেই ছবি যেন ভারতের সমাজের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠছে তা দেখানোর জন্য প্রতীকী তাবরেজের ঘটনাকে দেখানো হয়। বস্তার সলিডারিটি নেটওয়ার্কের তরফে জানানো হয়েছে, “কিছুদিন আগে সংসদে শপথ গ্রহণের সময়ে কীভাবে ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান তুলেছিল বিজেপি সাংসদরা, আর তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ সংসদের মেঝেতে ধীরে ধীরে খসে পড়েছিল ভারতীয় গণতন্ত্রের মুখোশ। কার্যত, হিন্দু মৌলবাদী নেতাদের দেওয়া সেই হিংসার ছাড়পত্রকে হাতিয়ার করেই আবারও নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হল আমাদের দেশের সহনাগরিক তাবরেজকে। জয় শ্রী রাম বলতেই হবে। এই অন্যায্য দাবি মেনে নেওয়া যায় না। বলতে হলে মন থেকে বলব। জোর করে চাপিয়ে দেওয়া জিনিস কেন কেউ বলতে যাবে? কেউ না বললে তাঁকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হবে? এ কেমন নীতি? এ কেমন নতুন ভারত?” এই প্রশ্নই কলকাতার বুকে দাঁড়িয়ে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন তাঁরা।
সুজাত ভদ্র বলেন , “জয় শ্রীরাম বললেই তুমি দেশ প্রেমী না হলেই দেশদ্রোহী! গরু কে ভালবাসলেই তুমি দেশি খেলেই তুমি পাকিস্তানি? এই নতুন ভারত তো আমরা ভাবিনি। ২০১৪ সালে প্রথমবার ক্ষমতায় এসেই মোদী বলেছিলেন তাঁরা ২০২৪ পর্যন্ত ক্ষমতাতে থাকছেনই। কিভাবে এতটা নিশ্চিত হওয়া যায়? আর যদি নিশ্চিত হওয়াই যায় তাহলে এমন ঘটনা কেন? কি করছেন কি ভাবছেন প্রধানমন্ত্রী? তিনি তো বলে দিয়েছেন ‘সব কা সাথ, সব কা বিকাশ’। জয় শ্রী রাম বললে তবে কি ‘সাথ আর বিকাশ’ দেবেন তিনি?”