অবশেষে কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিলেন রাহুল গান্ধী। লোকসভা ভোটের ফল ঘোষণার দু’দিন পরই কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে ইস্তফার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন রাহুল গান্ধী। সে দিনই বলেছিলেন, নতুন সভাপতি খুঁজে নিন। এতদিন ধরে নানা টালবাহানা চলার পর এ বার আনুষ্ঠানিক ভাবে কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েই দিলেন রাহুল। এমনকি টুইট করে তা প্রকাশও করলেন সর্বসমক্ষে। সেই সঙ্গে টুইটার হ্যান্ডেল থেকে কংগ্রেস সভাপতি হিসাবে তাঁর পরিচয়ও মুছে দিলেন।
এদিন নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, “উনিশের নির্বাচনী ব্যর্থতার জন্য আমিই দায়ী। দলের ভবিষ্যতের জন্যই দায়বদ্ধতা সুনিশ্চিত করা প্রয়োজন। কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে সেই কারণেই ইস্তফা দিয়েছি। দলকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে উনিশের ভোট-ব্যর্থতার জন্য অসংখ্য লোককে দায়ী করা দরকার। নিজে দায় স্বীকার না করে অন্যকে দায়ী করা যায় না। তাই নিজে ইস্তফা দিলাম।”
যদিও আরো কারা দোষী, সেই বিষয়ে তিনি খোলসা করে কিছু বলেননি। তবে তিনি জানিয়েছেন, দলের অনেক নেতা তাঁকে বলেছিলেন পরবর্তী সভাপতি-র নাম প্রস্তাব করতে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, “সেটা ঠিক হবে না। কারণ আমি বিশ্বাস করি এ ব্যাপারে দল সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম। দলের নেতারা এমন একজনকে সভাপতি পদে নির্বাচিত করবেন, যিনি সাহস, ভালবাসা আর নিষ্ঠার সঙ্গে কংগ্রেসকে নেতৃত্ব দেবেন।”
এদিন টুইটারে তিনি আরো লেখেন, “আমার রাজনৈতিক লড়াই কখনও সহজ ছিল না। বিজেপি-র বিরুদ্ধে আমার কোনও রাগ বা ঘৃণা নেই। কিন্তু ওরা যে ভাবে ভারত-কে দেখে, তাতে আমার দেহের প্রতিটি জীবন্ত কোষের আপত্তি রয়েছে। ওরা যেখানে ফারাক খোঁজে, আমি খুঁজি সামঞ্জস্য। ওঁরা যেখানে দেখে ঘৃণা, আমি দেখি ভালবাসা। আমি প্রধানমন্ত্রী ও আরএসএসের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। সেই লড়াই থেকে সরে আসছি না। কারণ, দেশ ও সংবিধানের উপর ক্রমাগত যে আঘাত হানা চলছে তাতে সৌভ্রাতৃত্বের বাতাবরণের জন্য সংকট তৈরি হয়েছে। কংগ্রেসের এক জন অনুগত সৈনিক হিসাবে শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত এর বিরুদ্ধে লড়াই করব।”
সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “উনিশের ভোটে কোনও রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে লড়িনি। বরং আমরা লড়েছি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। দেশের প্রতিটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান বিরোধীদের খর্ব করার চেষ্টা করেছে। প্রাতিষ্ঠানিক নিরপেক্ষতাই অস্তিত্ব হারিয়েছে।
আরএসএস তাদের ঘোষিত লক্ষ্যে পৌঁছে গেছে। দেশের সমস্ত রকম প্রতিষ্ঠান তারা দখল করে নিয়েছে। সব থেকে বড় বিপদ হল ভোট এখন আর দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারক নয়, কেবল একটা প্রথায় পরিণত হয়েছে।”