রাজ্যের প্রস্তাবিত ‘বাংলা’ নামে সায় না দেওয়ায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্যের ‘বাংলা’ নাম অনুমোদনের প্রস্তাব জানিয়েই এই চিঠি লিখেছেন মমতা।
জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে দেওয়া চিঠিতে মমতা লিখেছেন, ‘বাংলা ও বাঙালির আবেগের কথা মাথায় রেখে জরুরি ভিত্তিতে ‘বাংলা’ নামে অনুমোদন দেওয়া হোক’। রাজ্যের নাম বদলের ক্ষেত্রে এদিন যে সংবিধান সংশোধনের কথা বলেছে কেন্দ্র, সেই প্রসঙ্গও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন মমতা। তিনি লিখেছেন, ‘এটা টেকনিক্যাল ব্যাপার, কেন্দ্রকেই করতে হবে’।
উল্লেখ্য, সংসদের জিরো আওয়ারে রাজ্যের নাম বদলের দাবি উত্থাপন করেন নির্দল সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। একইসঙ্গে রাজ্যের নাম পরিবর্তনের বিষয়টি কতদূর এগিয়েছে, সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে সম্প্রতি সংসদে লিখিতভাবে জানতেও চান ঋতব্রত। তার জবাবে লিখিত ভাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই জানিয়ে দিয়েছেন, বিষয়টি উত্থাপনই হয়নি। তাঁর বক্তব্য, নাম পরিবর্তনের জন্য সংসদে বিল পেশ করে সংবিধান সংশোধনী আনতে হয়। কিন্তু সেটা যে হেতু করা হয়নি, তাই নাম পরিবর্তনের বিষয়টি সেই বিল পেশের উপরেই নির্ভর করছে। বিশেষজ্ঞদের কথায়, সংবিধান সংশোধন করতে পারে কেন্দ্র সরকার, রাজ্য নয়। ঠিক যেভাবে ‘উড়িষ্যা’র নাম বদলে ‘ওড়িশা’ করা হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রের সরকারের যুক্তি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের যুক্তি, রাজ্যের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ। সেখানেও নামে ‘বাংলা’ রয়েছে। ফলে তা সমস্যা তৈরি করতে পারে। কিন্তু কেন্দ্রের এই যুক্তিকেও আমল দিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের কথায়, পাকিস্তানেও ‘পঞ্জাব’ নামে একটি প্রভিন্স রয়েছে। আবার এদিকে ভারতেও ‘পঞ্জাব’ নামে রাজ্য রয়েছে। তাতে যদি কোনও সমস্যা না হয়ে থাকে, তবে এক্ষেত্রে সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা অযৌক্তিক। কারণ পড়শি দেশের সম্পূর্ণ নাম বাংলাদেশ। তাঁদের আরও প্রশ্ন, ‘ইস্টবেঙ্গল’ নামটি শুধুই রয়েছে খাতায়-কলমে আর ফুটবল ক্লাবের নামে। তাহলে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল’ নামটি চালিয়ে যাবার কি যুক্তি? বিপুল ভোটে দ্বিতীয়বার জিতে আসার পর যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় দেশ চালানোর কথা বলছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু রাজ্যবাসীর আবেগ জড়িয়ে যে নামের সঙ্গে তাকে গুরুত্ব না দিয়ে, সেই যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো কতটা মানছেন মোদী? এমন প্রশ্নও তুলছেন বিশেষজ্ঞরা।