বাংলার ক্ষমতায় এসেই স্বাস্থ্যের উন্নতিকে পাখির চোখ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তাই একাধিক উদ্যোগ তিনি নিয়েছেন এই খাতে৷ এনেছেন ‘স্বাস্থ্যসাথী’র মত জনদরদী প্রকল্প৷ এবার এই প্রকল্পকে আরও বেশি করে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হল সরকার৷
স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে আরও বেশি করে মানুষকে যুক্ত করতে পার্মানেন্ট এনরোলমেন্ট সেন্টার বা নাম নথিভুক্তি কেন্দ্র চালু করতে চলেছে রাজ্য সরকার৷ ইতিমধ্যেই প্রতিটি জেলা প্রশাসনের কাছে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে এই ব্যাপারে নির্দেশিকা চলে গিয়েছে। রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্যবিমা যোজনায় যাঁরা ছিলেন, তাঁদের নামের তালিকা দিল্লি থেকে চলেও এসেছে। এবার তাঁদের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করতে ব্লকে ব্লকে এই সেন্টার চালু করে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সপ্তাহেই স্বাস্থ্য দফতর থেকে ব্লকে ব্লকে এই সেন্টার চালু করতে জেলা প্রশাসনের কাছে নির্দেশ এসেছে। সেইমতো শনিবার হাওড়ায় প্রতিটি পঞ্চায়েত সমিতির কর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন জেলাশাসক। সেখানে জানিয়ে দেওয়া হয়, পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে আপাতত এই এনরোলমেন্ট সেন্টার করতে হবে। যাঁরা এতদিন রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্যবিমা যোজনার অধীনে ছিলেন, তাঁদের নামের তালিকা রাজ্য সরকারের কাছে ছিল না। ফলে তাঁদের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের মধ্যে আনা সম্ভব হচ্ছিল না। এবার তাঁদের নামের তালিকা রাজ্য সরকারের কাছে চলে এসেছে। তাঁদের এবার স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড দেওয়া হবে। এই কার্ড পেলে উপভোক্তা সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতালে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার সুযোগ পাবেন। তার জন্য তাঁদের বিমার কোনও টাকা দিতে হবে না।
সূত্রের খবর, জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই এই সেন্টার চালু হবে। এছাড়াও রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কোনও মানুষের কঠিন রোগের কারণে দ্রুত স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড প্রয়োজন হলে, তাঁদের তিনদিনের মধ্যেই কার্ড দেওয়া হবে। এর জন্য প্রতিটি জেলায় একজন অতিরিক্ত জেলাশাসককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে রাজ্য সরকার আরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কারও কঠিন রোগ হয়েছে, অথচ কার্ড নেই, তাঁকে জরুরি ভিত্তিতে কার্ড দেওয়া হবে। তার জন্য প্রতিটি জেলায় একজন অতিরিক্ত জেলাশাসক দায়িত্বে থাকবেন। তাঁর কাছে আবেদন করলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে ওই আবেদনপত্র স্বাস্থ্য দফতরে পাঠাবেন। স্বাস্থ্যদফতর পরের দিনই তার অনুমোদন অতিরিক্ত জেলাশাসকের কাছে পাঠিয়ে দেবেন। উপভোক্তা যাতে সঠিক সুযোগ পান, তার জন্য ব্লকস্তরে স্বাস্থ্যসাথীর এনরোলমেন্ট সেন্টার চালুর উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার।
এই কাজের জন্য একটি এজেন্সিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ওই এজেন্সি এই এনরোলমেন্ট করে তাঁদের হাতে কার্ড তুলে দেবেন। এছাড়াও উলুবেড়িয়া-১ পঞ্চায়েত সমিতির অফিস ও হাওড়ায় নিউ কালেক্টরেট বিল্ডিংয়ে যেমন স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের নাম নথিভুক্ত করা যায়, তেমন আগের মতোই করা যাবে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এতে অনেক মানুষ সরকারি সুযোগ পাবেন। যাঁরা এতদিন এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিলেন, তাঁরা এবার সেই সুযোগ পাবেন।