শুধুই ক্লাবের হয়ে নয়, দেশের জার্সি গায়েও তাঁর সাফল্য ঈর্ষা করার মতোই। তবে চলতি কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে লুইস সুয়ারেজের ভাগ্য লেখা ছিল ভিন্নভাবে৷ এদিন পেরুর বিরুদ্ধে টাইব্রেকার মিস করে সমর্থকদের চোখে ভিলেন বনে গেলেন এই বার্সেলোনা তারকা৷ ফলে নির্ধারিত সময়ে গোলশূন্য ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ালে, সেখানে ৪-৫ গোলে হেরে কোপা আমেরিকা থেকে বিদায় নিলো উরুগুয়েকে৷
ম্যাচের আগে ‘এ’ গ্রুপের তৃতীয় স্থানাধিকারী দল পেরুর থেকে সব দিক দিয়েই এগিয়ে ছিল উরুগুয়ে৷ বিশেষ করে গ্রুপের শেষ ম্যাচে গত দু’বারের চ্যাম্পিয়ন চিলিকে হারিয়ে নক-আউটের জন্য বাড়তি আত্মবিশ্বাস জোগাড় করে নিয়েছিল সুয়ারেজ, কাভানির দল৷ তা সত্ত্বেও ভুলে ভরা ম্যাচে পেরুর বিরুদ্ধে দাপট দেখাতে ব্যর্থ হয় উরুগুয়ে৷
ম্যাচের দুই অর্ধে গোলের তিনটি সহজ সুযোগ পেয়েছিল উরুগুয়ে৷ তবে ফিনিশিং টাচ দিতে ব্যর্থ হয় তারা৷ ২৫ মিনিটে সুয়ারেজের দুরন্ত ড্রিবল পেরুর রক্ষণে আতঙ্ক ধরালেও কাভানি শট অরক্ষিত জালে রাখতে পারেননি৷ ফলে প্রথমার্ধেই ম্যাচে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ হাতছাড়া হয় তাদের৷ দ্বিতীয়ার্ধের ৫৮ ও ৭২ মিনিটে পেরু বক্সে হানা দিয়েও গোল করতে ব্যর্থ হয় উরুগুয়ে৷ প্রথমে সুয়ারেজ মিস করেন সহজ সুযোগ৷ পরে গডিন ব্যর্থ হন লক্ষ্যভেদে৷
নির্ধারিত সময়ে ম্যাচ অমীমাংসিত থাকায় পেনাল্টি শুট-আউটে ফলাফল নির্ধারিত হয়৷ শুরুতেই স্পট কিক থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন সুয়ারেজ৷ পেনাল্টিতে উরুগুয়ের হয়ে প্রথম শট নেন বার্সা তারকা৷ তাঁর শট দুরন্ত ক্ষিপ্রতায় প্রতিহত করেন পেরু গোলরক্ষক পেদ্রো গালেসে৷ পালটা শট নিতে এসে পাওলো গুয়েরেরো গোল করে এগিয়ে দেন পেরুকে৷
পরের চারটি শটে কাভানি, স্টুয়ানি, বেনতাঙ্কুর ও লুকাস গোল করেন উরুগুয়ের হয়ে৷ তবে উলটো দিকে পেরুর হয়ে বল উরুগুয়ের জালে রাখেন রুইদিয়াজ, যশিমার, লুইস ও এডিনসন ফ্লোরেস৷ ফলে স্বপ্ন ভঙ্গ হয় সুয়ারেজদের। যার ফলে এ যাত্রায় কোপা আমেরিকা থেকে বিদায় নিতে হয় উরুগুয়েকে৷ স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচের শেষে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায় বার্সায় খেলা মেসির এই সতীর্থ স্ট্রাইকারকে।
উরুগুয়ে হেরে যাওয়ায় সেমিফাইনালের টিকিট পাকা করে ফেলল পেরু৷ শেষ চারে পেরুর মুখোমুখি হবে গতবারের চ্যাম্পিয়ন চিলি। যারা ইতিমধ্যেই অন্য কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে কলম্বিয়াকে পরাস্ত করে এসেছে৷ তবে আপাতত ফুটবলবিশ্বের নজর থাকছে কোপা আমেরিকার প্রথম সেমিফাইনাল ম্যাচের দিকে৷ যেই খেলায় মেসির আর্জেন্তিনার মুখোমুখি হবে এবারের কোপা আয়োজক দেশ ব্রাজিল।