বাংলাকে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখার জন্যে গোটা বছর ধরে নানারকম পদক্ষেপ নিয়ে থাকেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর উদ্যোগেই গোটা বাংলা আজ দারুণ আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে পর্যটকদের কাছে। কিছুদিন আগেই স্কাইওয়াক হয়েছে দক্ষিণেশ্বরে। এবার দক্ষিণেশ্বরের আদলে সেজে উঠতে চলেছে কালীঘাট। হচ্ছে মন্দির সংস্কার। কালীঘাট স্কাইওয়াক তৈরির প্রজেক্ট রিপোর্টের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়, শীঘ্রই মেয়রের দফতরে তা জমা পড়বে। তার পরেই কাজ শুরু
পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বুধবার বিধানসভায় বলেন, “যাঁরা বলেন আমরা নাকি একটা অংশকে দেখি, তাঁদের বলি এইসব কাজ ধর্মনিরপেক্ষতার নজির। দক্ষিণেশ্বর ও তারকেশ্বর মন্দির সংলগ্ন এলাকার উন্নয়ন হচ্ছে। দক্ষিণেশ্বরে ৬৩ কোটি ১০ লাখ টাকা দিয়ে স্কাই ওয়াক করেছি। দুই কোটি ৪৮ লাখ দিয়ে ভোগ ঘর গড়া হয়েছে। সারদা মায়ের ঘাটের জন্য ৮ কোটি ১০ লাখ এবং নদীঘাট উন্নয়নেও প্রায় ১০ কোটি খরচ হয়েছে। তারকেশ্বর মন্দির উন্নয়নে পাঁচ কোটি ৯২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আলোকসজ্জা ও আনুষঙ্গিক উন্নয়নে চার কোটি ৭৩ লাখ, মন্দির যাওয়ার রাস্তার জন্য প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। তারাপীঠে তিন কোটি এবং কঙ্কালীতলায় দুই কোটি ৯২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।
ওয়াকফ বোর্ড থেকে যেমন মোয়াজ্জেম ভাতা দেওয়া হয় তেমনই সেবাইত বা পুরোহিত ভাতার প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, “যদি সব মন্দির কমিটি বা ট্রাস্ট এক জায়গায় আসে এবং একমত হয় তো সেটা দেওয়া যেতে পারে।” বিধায়ক অসিত মিত্রর প্রশ্নের জবাবে কলকাতার কোনও পুকুর বা জলাজমি এখন ভরাট হচ্ছে না বলে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, “এমন কাজ করলে কড়া শাস্তি দেওয়া হবে। একটা সময় জলাজমি ভরাট অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল। এখন তা নেই বললেই চলে। আমরা বরং অভিযোগ পাওয়ার পরও থানার ওসি ব্যবস্থা না নেওয়ায় পুলিশ কমিশনারকে বিষয়টি জানিয়েছি।”
বিধায়ক মানস মুখোপাধ্যায়ের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী জানান, “দক্ষিণেশ্বরের স্কাইওয়াকের সময় রানি রাসমণির একটি মূর্তি দেন মন্দির কমিটির লোকজন। সেটি স্থাপনের জায়গা দেখছে কামারহাটি পুরসভা। সেখানে একটি পার্কে সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তি ছিল। বিধানচন্দ্র রায়ের আমলে স্থাপিত সেই মূর্তিটি তখন সরাতে হয়। ওই পার্কেই ফের মূর্তিটি বসানো হবে।”
ফিরহাদ হাকিম দাবি করেন, “তারকেশ্বরে ও অনেক উন্নয়ন হয়েছে। আমরা সর্ব ধর্ম বিশ্বাস করি, এটা ওদিকে যারা বসে বিশ্বাস করে না। এখানে অনেকেই তোয়াজের কথা বলেন। অনেকেই বলেন, আমরা নাকি একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষকে তোয়াজ করি। তাঁদের বলে রাখি, দক্ষিণেশ্বরে স্কাইওয়াক তৈরি করেছি। ভোগঘর হচ্ছে। তাঁরা একবার সেটা দেখুন।”
ওয়াকফ বোর্ডের মতোই রাজ্যের মন্দিরহগুলোর জন্য কোনও কমিটি গঠন করা যায় কিনা, এদিনের অধিবেশনে তার প্রস্তাব ওঠে। ফিরহাদ বলেন, “এটা আমার দফতর না তাও দেখব আমরা, কী করা যায়।” খুব তাড়াতাড়ি কালীঘাটেও স্কাইওয়াক হবে বলে জানান তিনি। এদিন বিধানসভায় দাঁড়িয়েই ফিরহাদ বলেন, “কোনও ধর্মকে তোয়াজ করি না আমরা। বাংলার ঐক্যে বিশ্বাস করি। এটাই আমাদের ঐতিহ্য।”