লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরই আরও আগ্রাসী হয়ে উঠেছে গেরুয়া শিবির। গোটা রাজ্যজুড়ে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করেছে তারা। তবে এরই মধ্যে খোদ পদ্মশিবিরের অন্দরেই চলছে ব্যাপক গোষ্ঠীকোন্দল। বিজেপির ভিতর ও বাহিরে অন্দরে-অন্দরে এখন লড়াই চলছে ‘পুরনো’ বিজেপি বনাম ‘নতুন’ বিজেপির। লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলামের পর এবার ক্ষোভের মুখে বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস।
প্রসঙ্গত, দিনকয়েক আগেই দিল্লীতে বিজেপির সদর দফতরে গিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হাত ধরে বিজেপিতে যোগদান করেন বনগাঁ উত্তরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস-সহ বনগাঁ পুরসভার ১২ জন কাউন্সিলর। ভিনদল থেকে আসা ‘বহিরাগত’ বিশ্বজিৎ দাসের বিজেপিতে যোগদান মেনে নিতে পারছেন না বনগাঁ উত্তরের নিচুতলার বিজেপির কর্মী সমর্থকেরা। বিজেপির পুরনো কর্মী সমর্থকদের অভিযোগ, ‘যাদের বিরুদ্ধে আমরা এতদিন লড়াই করে রক্ত ঝরিয়েছি তারা এখন দলের কিছু উঠতি নেতার সহযোগিতা নিয়ে বিজেপিতে যোগদান করবে এটা মেনে নেওয়া যায় না।’
গতকাল বিশ্বজিৎ দাসের যোগদান নিয়ে বনগাঁ শহরে একটি প্রতিবাদ মিছিল করে বিজেপির প্রতিবাদী কর্মী-সমর্থকেরা। মিছিল বনগাঁ শহরের বেশ কয়েকটি অংশ পরিক্রমা করে ত্রিকোণ পার্কে এসে শেষ করে অস্থায়ী পথসভার রূপ নেয়। সেখানেই কোনও বিশ্বজিৎ দাসের বিজেপিতে প্রয়োজন নেই বলে প্রকাশ্যে জানিয়ে দেন বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীরা। তাঁরা এই যোগদানকে কোনও মতেই মেনে নেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। যার ফলে ফের বাইরে চলে এসেছে গেরুয়া শিবিরের অন্দরের কোন্দল।
উল্লেখ্য, দিল্লীতে বিশ্বজিৎ দাসের যোগদানের দিনই প্রতিবাদী বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা বিধায়কের কুশপুতুল দাহ ও প্রতিবাদ মিছিল সংগঠিত করে। সেখানে বিশ্বজিতের নামে এই অভিযোগ ওঠে যে, দল পরিবর্তন করেই যথেচ্ছাচার করছেন তিনি। কর্মীদের ওপর রীতিমতো অত্যাচার চালিয়ে তাঁর কথা শুনতে বাধ্য করছেন। তাই অবিলম্বে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হোক। প্রতিবাদী বিজেপি কর্মীরা এ-ও জানান, দুষ্টু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভাল। তবে ওই ঘটনাকে আমল না দিয়ে বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্ব বিধায়ক-সহ বনগাঁ পুরসভার ১২ জন কাউন্সিলরকে সংবর্ধনা জানান।
কিন্তু এর পরে আরও বেঁকে বসেন কর্মীরা। তাঁদের দাবি, লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকেই এর পর এক ভিনদলের নেতা এসে যোগ দিচ্ছেন দলে। এবং দলের সমর্থকদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছেন। এভাবে বহিরাগতরা বিজেপিতে ভিড় জমাতে থাকলে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হবেই বলে মত বিক্ষুব্ধদের। উল্লেখ্য, এর আগে মনিরুল ইসলাম বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সময়ও একইভাবে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। এবারও ঠিক একইভাবে কর্মী-সমর্থকদের প্রতিবাদে সিঁদূরে মেঘ দেখছেন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব।