বীরভূমের মণিরুল ইসলামের পর এবার ডুয়ার্সের চা-বলয়ের বিতর্কিত বিধায়ক উইলসন চম্প্রমারিকে দলে টানল বিজেপি। দিল্লীতে বিজেপি নেতৃত্বের উপস্থিতিতে দলবদল করেন তিন বারের এই বিধায়ক। অথচ ২০১৬ নির্বাচনের আগে বীরপাড়ার মাটিতে দাঁড়িয়ে কালচিনির ওই বিধায়ককে ‘চন্দন দস্যু’ বলে সম্বোধন করেছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রশ্ন উঠছে, মাত্র তিন বছরের মধ্যে কী এমন ঘটল যে ‘দস্যু’ থেকে ‘রত্নাকর’ হয়ে গেলেন চম্প্রমারি? নাকি বিজেপি সেই গঙ্গা যেখানে যোগ দিলে ‘দস্যু’ আপনাআপনি ‘রত্নাকর’ হয়ে যায়?
২০১৫ সালের শেষ দিকে কর্ণাটক থেকে ভুটানে লাল চন্দন কাঠ পাচারের অভিযোগ ওঠে কালচিনির বিধায়ক উইলসন চম্প্রমারির বিরুদ্ধে। পুলিশি অভিযানে বীরপাড়া থেকে উদ্ধার হয় কোটি টাকার চন্দন কাঠ। তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তখন তিনি অবিভক্ত গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিধায়ক চম্প্রমারি। তারপর গঙ্গা দিয়ে বহু জল বয়ে গেছে। চম্প্রমারিও বিরুদ্ধে তথ্য প্রমান দিতে ব্যর্থ হয় পুলিশ। তিনিও দল বদলে তৃণমূল হয়ে এখন বিজেপিতে।
চম্প্রমারিকে দলে নেওয়ার সর্বভারতীয় বিজেপি নেতৃত্বের সিদ্ধান্তে রীতিমতো অসন্তুষ্ট আলিপুরদুয়ারের নেতারা। মণিরুলের মতো এবার ‘পচা শামুকে পা কাটবে’ বলে মন্তব্য করেছেন গেরুয়া শিবিরের নেতারাই। এই প্রসঙ্গে আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বারলা বলেন, ‘নীচুতলার অনেক নেতা-কর্মী আমাকে ফোন করে চম্প্রমারিকে দলে নেওয়ার কারণ জানতে চেয়েছেন। তাঁদের বলেছি, কেন তাঁকে নেওয়া হয়েছে তা আমার জানা নেই। আসলে ওই সব নেতাদের জন্য অনেক বিজেপি কর্মী মার খেয়েছেন, জেলে গিয়েছেন’। অর্থাৎ চম্প্রমারিকে নিয়ে বিজেপির নীচুতলার অসন্তোষ স্পষ্ট।
তৃণমূল অবশ্য চম্প্রমারির দলবদলকে পাত্তাই দিচ্ছে না। কালচিনি ব্লক তৃণমূলের জেলা সভাপতি অসীম মজুমদার বলেন, ‘উইলসনের বর্তমানে কোনও গ্রহণযোগ্যতা ছিল না। দলও তাঁকে নিয়ে আগ্রহ হারিয়েছিল। তাই তাঁর দলবদলে আমাদের সংগঠনে কোনও প্রভাব পড়বে না’।
(মতামত ব্যক্তিগত)