গোটা দেশে কৃষকদের দুরাবস্থা সম্পর্কে সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। কিন্তু কৃষক আত্মহত্যার সঠিক পরিসংখ্যানটা কত তা নিয়ে ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছিল। কারণ সরকারের কোনও ওয়েবসাইটে ২০১৬ সালের পর থেকে এই বিষয়ে তথ্য নেই। তবে দ্বিতীয়বার মোদী সরকার ফিরে আসার পর শেষ তিন বছরের কৃষক আত্মহত্যার সংখ্যা প্রকাশ্যে আনল। তবে মাত্র একটি রাজ্যের।
সংখ্যাটা ১২,০২১! শেষ তিন বছরে বারো হাজারের বেশি কৃষক আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্রে। হয়তো বলা ভালো, করতে বাধ্য করা হয়েছে। এই আত্মহত্যার পরিসংখ্যান ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত। শুক্রবার মহারাষ্ট্র বিধানসভায় কৃষক আত্মহত্যা সম্পর্কে এই তথ্যই জানিয়েছে মহারাষ্ট্র সরকার।
মহারাষ্ট্র সরকারের এই পরিসংখ্যানই বুঝিয়ে দিচ্ছে, দেশের বাকি অংশে কৃষকদের দুরাবস্থা কোন জায়গায় পৌঁছেছে। এর কারণ হিসেবে যেমন মহারাষ্ট্র সরকারের জমি অধিগ্রহণকে কাঠগড়ায় তোলা যেতে পারে। তেমনই কৃষি ঋণ মকুব না হওয়া আরেকটি বড় কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। মৃত কৃষকদের সংখ্যা ১২ হাজারের বেশি হলেও এর মধ্যে মাত্র ৬,৮৮৮ জন কৃষক পরিবারকে সরকার সাহায্য করবে বলে জানা গিয়েছে। এর মধ্যে ৬,৮৪৫ জন কৃষকের পরিবার পিছু ১ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিয়েছে সরকার। চলতি বছর আবার কেবল জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যেই ৬১০ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন মহারাষ্ট্রে।
আরেকবার মনে করিয়ে দেই, এই তথ্য পুরোটাই সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশ করা হয়েছে। ফলে সে ক্ষেত্রে তথ্য চেপে রেখে দেওয়ার একটা সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। সরকারি হিসেবে এই সংখ্যাটা যদি ১২ হাজার হয়, তবে বেসরকারি হিসেবে তা অনায়াসে ২০,০০০ পেরিয়ে যেতে পারে। আর শেষ তিন বছরে দেশজুড়ে কৃষক আত্মহত্যার তথ্য যদি প্রকাশ্যে আনা হয়, তবে নরেন্দ্র মোদীর রাতের ঘুম উড়ে যেতেও বেশি সময় লাগবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সেই কারণে কৃষক অসন্তোষের যদি দ্রুত সমাধান না করা হয় তবে আখেরে তা দেশের জন্যই ক্ষতিকর বলে প্রমাণিত হবে বলেই মনে করছেন তাঁরা।