আয়কর বিভাগ তল্লাশি চালিয়েছে একাধিকবার। সিবিআই কড়া নজরদারি রেখেছে। বিজেপি নেতারাও ‘অন্ধ্রের মালিয়া’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন একসময়। কিন্তু সেই নেতারাই টিডিপি ছেড়ে যোগ দিলেন গেরুয়া শিবিরে। বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বও সাদরে গ্রহণ করে নিলেন তাঁদের।
আয়কর, সিবিআই এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরের নজরে থাকা টিডিপির রাজ্যসভার দুই সদস্য সি এম রমেশ এবং ওয়াই এস চৌধুরী বৃহস্পতিবার অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের পর যোগ দিলেন বিজেপিতে।
গত বছরের নভেম্বরেই বিজেপি এমপি এবং মুখপাত্র জি ভি এল নরসিমা রাও এই দুই নেতাকে ‘অন্ধ্রের মাল্য’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন। এমনকী সি এম রমেশের বিরুদ্ধে বৃহত্তর আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগও এনে রাজ্যসভার এথিক্স কমিটির কাছে এই দুজনের বিরুদ্ধে ‘যথাযথ ব্যবস্থা’ নেওয়ার কথাও বলেছিলেন। কিন্তু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেই দুই প্রাক্তন টিডিপি নেতার বিরুদ্ধে চুপ বিজেপি নেতারা। আসলে বিজেপি গঙ্গার মতো, তাতে যোগ দিলেই সবাই শুদ্ধ, এই ঘটনার পর এমনই বলছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।
গত বছরের অক্টোবরে আয়কর তদন্তে রমেশের সঙ্গে যুক্ত একটি কোম্পানির প্রায় ১০০ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের হদিশ মেলে। ইনকাম ট্যাক্স ডিপার্টমেন্টের মতে, “ঋত্বিক প্রজেক্টস প্রাইভেট লিমিটেড (আরপিপিএল) কোম্পানিটি অপ্রত্যাশিত লেনদেনের মাধ্যমে ৭৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছিল।” যে কারণে গত ১২ ই অক্টোবর, আয়কর বিভাগ হায়দ্রাবাদে রমেশের বাসভবনে তল্লাশি চালায়। সেইসময় টিডিপি শীর্ষ নেতৃত্ব এটাকে বিজেপির চক্রান্ত বলে দাবি করেছিল।
সিবিআই-এর অভিযোগ, রমেশ নিজের প্রতিপত্তি ও ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে থাকা সমস্ত মামলাগুলিকে প্রভাবিত করছেন। যদিও রমেশ তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন।
এরপর সিবিআইয়ের এফআইআর-এর উপর ভিত্তি করে ইডি ওয়াই এস চৌধুরীর বিরুদ্ধে অর্থ কেলেঙ্কারির তদন্ত শুরু করে। চৌধুরির বিপুল বেনামী সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত করা হয়। তার মধ্যে আছে ফেরারি, বিএমডাব্লু এবং রেঞ্জ রোভারের মতো দামি গাড়ি।
গত বছরের ৮ ই অক্টোবর, বিসিইপিএলের প্রধান কর্মকর্তাদের বাড়ি এবং অফিসে তল্লাশি চালায় ইডি। তাতে প্লট নং ৮, নাগার্জুনা হিলস, পুঞ্জগুট্টার অফিস থেকে বিভিন্ন শেল কোম্পানিগুলির ১২৬ রকমের বেআইনি রাবার স্ট্যাম্প পুনরুদ্ধার এবং বাজেয়াপ্ত হয়। এহেন কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত থাকা দুই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় স্বভাবতই বিরোধীদের কটাক্ষের শিকার হতে হচ্ছে বিজেপিকে।