পাওয়ারেরা; জোটের মাথাব্যথা বাড়িয়ে নেই শিবসেনাও
‘এক দেশ এক নির্বাচন’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকা সর্বদল বৈঠকে যাবেন না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর দেখানো পথেই হাঁটলেন বসপা নেত্রী মায়াবতী, ডিএমকে নেতা এম কে স্ট্যালিন, এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ারেরা। জোটের মাথাব্যাথা বাড়িয়ে এই বৈঠকে থাকছে না শিবসেনাও। বৈঠকে যোগ দেওয়া নিয়ে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেনি, তবে তাঁরা বৈঠকে যাচ্ছেন না বলে এ দিন সংসদে ঢোকার মুখে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়ে দেন দলের সাংসদ গৌরব গগৈ। তবে নিজেরা না গেলেও বৈঠকে প্রতিনিধি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কে চন্দ্রশেখর রাও, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, চন্দ্রবাবু নায়ডুরা।
বৈঠকে না যাওয়া নিয়ে এ দিন টুইটারে মায়াবতী জানান, ‘গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচন কখনও বড় সমস্যা হতে পারে না। খরচের দোহাই দিয়ে সেটাকে সমস্যা বলে তুলে ধরাও ঠিক নয়। দেশ জুড়ে যখন দারিদ্র, মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ব এবং হিংসার ঘটনা উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে, সেইসময় মানুষের নজর ঘোরাতেই এই এক দেশ, এক নির্বাচন বৈঠক ডাকা হয়েছে’।
তবে মোদীর সর্বদল বৈঠকে যাবেন না বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই সর্বপ্রথম ঘোষণা করেন। গত কাল দুপুরে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশীকে উপস্থিত না থাকতে পারার কারণ জানিয়ে চিঠি পাঠান তিনি। তাতে লেখেন, ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’-এর মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে ঠিক মতো আলোচনা করা এত কম সময়ের নোটিসে সম্ভব নয়’।
মমতার ব্যাখ্যা, এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে হলে সংবিধান বিশেষজ্ঞ, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ এবং দলের সদস্যদের সঙ্গে আগে কথা বলা দরকার। দেশের সংসদ বিষয়ক মন্ত্রীকে তৃণমূল চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শ, ‘এই বিষয়টি নিয়ে একটি শ্বেতপত্র তৈরি করুন এবং তা সব রাজনৈতিক দলকে দিন। সময় দিয়ে এ বিষয়ে তাদের মতামত জানতে চান।’ মমতা চিঠিতে আরও লেখেন, ‘আমরা ১৫ জুন নীতি আয়োগের বৈঠকেই এ ব্যাপারে আমাদের মত জানিয়েছিলাম। যে কোনও রাজ্যের কয়েকটি জেলাকে পিছিয়ে পড়া হিসেবে দাগিয়ে দেওয়া নিয়ে আমাদের আপত্তি রয়েছে। এতে রাজ্যের সমস্ত জেলাগুলির সুষম বিকাশের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। আমাদের রাজ্য সমস্ত জেলার সুষম আর্থিক এবং সামাজিক বিকাশের প্রশ্নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’।
তৃণমূল সূত্রে খবর, দু’টি বিষয়ে ক্ষুব্ধ হয়েছেন মমতা। প্রথমত, প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক হবে কিন্তু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠাচ্ছেন সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী। বিষয়টি অসম্মানজনক বলেই মনে করছেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। দ্বিতীয়ত, শেষ মুহূর্তে চিঠি দিয়ে ডাকার পিছনে তলব করার প্রচ্ছন্ন মানসিকতা রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।