ইংল্যান্ডে চলা এই বিশ্বকাপে কোহলির দলের জন্য একেবারেই লাল কার্পেট অভ্যর্থনা নিয়ে কেউ দাঁড়িয়ে নেই। ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা আইসিসি তো নয়ই। তাই মাঠের লড়াইয়ের সঙ্গে মাঠের বাইরের লড়াইও জিততে হবে তাঁদের৷
টুর্নামেন্ট শুরুর আগে কোহলির সিংহাসনে বসা ছবি আইসিসি টুইট করায় বিতর্কের ঝড় বয়ে গিয়েছিল। তখন অনেকে প্রশ্ন তোলেন, কোহলি বা ভারতের মতো আরও ন’টি দেশ ও তাদের ক্যাপ্টেনরা আছেন। তা হলে শুধু ভারত অধিনায়কের সিংহাসনে বসা ছবি টুইট করল কেন আইসিসি? নিয়ামক সংস্থা হয়ে তারা নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে পারল কোথায়?
কিন্তু যত দিন গেছে স্পষ্ট হয়েছে এই ধারণা একেবারে ভুল৷ বরং আইসিসি যেন ভারতের জন্যই বেশি কাঁটা ছড়িয়ে রেখেছে৷
ভারতের প্রথম চারটি ম্যাচই ছিল সব চেয়ে শক্তিশালী। দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজ়িল্যান্ড, পাকিস্তান। মানে প্রথম চারটে ম্যাচেই বিশ্বকাপ ভাগ্য এসপার-ওসপার হয়ে যেতে পারত বিরাট, রোহিতদের। অন্য কোনও দলকে শুরুতেই এ ভাবে সব শক্তিশালী দলের মুখে পড়তে হয়নি। মিলিয়ে মিশিয়ে প্রতিপক্ষ পেয়েছে। ইংল্যান্ড যেমন তাদের সব চেয়ে শক্তিশালী দুই প্রতিপক্ষ ভারত ও অস্ট্রেলিয়াকে খেলছে শেষের দিকে। আবার অন্যরা মাঠে নেমে পড়লেও ভারত নেমেছিল সবার শেষে৷
প্রশ্ন উঠছিল পিচের চরিত্র নিয়ে। শুরুর দিকে অনেক জায়গায় আইসিসি-র পিচ প্রধান অ্যান্ডি অ্যাটকিনসনকে দেখা যাচ্ছিল না। বিভিন্ন জায়গার পিচে খুব বেশি পরিমাণে তফাত ধরা পড়ছিল। ভারতের প্রথম ম্যাচ হয়েছিল সাউদাম্পটনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে। পিচ বেশ কঠিন ছিল।
সব চেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ হচ্ছে, প্রধান পিচ প্রস্ততকারক না থাকায় নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। পিচ তদারকির দায়িত্ব দিয়ে দেওয়া হচ্ছিল স্থানীয় কিউরেটরদের হাতে। স্থানীয় কিউরেটর মানে তাঁরা সবাই ইংল্যান্ডের। অনেকেই তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছিলেন।
চাপে পড়ে আইসিসি এখন তাদের প্রধান পিচ প্রস্তুতকারক অ্যান্ডি অ্যাটকিনসনকে ফিরিয়ে এনেছে। নিয়ামক সংস্থা এ ব্যাপারে সরকারি ভাবে বিবৃতি দেয়নি। আগে যখন অ্যাটকিনসনকে দেখা যাচ্ছিল না, তখনও তারা চুপচাপ বসে ছিল। বেসরকারি ভাবে আইসিসি কর্তারা বলার চেষ্টা করছিলেন, অ্যাটকিনসনকে দরকার পড়লে নিশ্চয়ই আনা হবে। এখনও হয়তো প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাবেন তারা। কিন্তু পিচ-কাণ্ড চোখের আড়াল করা তার পরেও কঠিন হবে।