‘মানুষের থেকে টাকা নেওয়া বন্ধ করুন। দলে চোরেদের রাখা হবে না। যাঁরা যেতে চান, চলে যান। দলত্যাগীদের আর ফেরানো হবে না।’ লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর দলীয় কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠকে এমনই কঠোর বার্তা দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কাউন্সিলরদের টিকিট দেওয়ার ক্ষেত্রে এবার থেকে ‘পারফরম্যান্স’ই একমাত্র মাপকাঠি হবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন তৃণমূল নেত্রী। কাউন্সিলরদের ভালো করে ‘ভোটার তালিকা খতিয়ে’ দেখার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
এদিন নজরুল মঞ্চের সভা থেকে নাম না করে মুকুল ও শুভ্রাংশুর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, ‘ভুল করে বাবা-ছেলেকে টিকিট দিয়েছিলাম। তবে এখন তো নতুন স্টাইল হয়েছে। চুরি করলেই পালিয়ে যায়। চুরি করছে, ধরা পড়ছে আর অন্য দলে নাম লেখাচ্ছে। এবার থেকে ডেডিকেটেড বাবা-ছেলেকে টিকিট দেব, যাঁরা দল ছেড়ে পালাবেন না’। মুখ্যমন্ত্রীর নিশানায় ছিলেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংও। নাম না করে মমতা বলেন, ‘সরকারের সমস্ত জায়গা ফাঁকি দিয়ে নিজের নামে করে নিয়েছে। এদের ক্ষমা করব না’।
এরপরই দলের সমস্ত কাউন্সিলরের উদ্দেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেস দুর্বল দল নয়। এটা রামধনু পার্টি নয়। কখনও মনে হল বিজেপি করব, কখনও মনে হল সিপিএম করব। আমি রাজনীতি করি মানুষের জন্য। কোথায় কোনও একটা গ্রামসভা চুরি করে পালিয়ে গেল, তাতে আমার বয়ে গেছে। কিচ্ছু যায় আসে না। ১৫-২০ জন কাউন্সিলর চলে গেলে যায় আসবে না। যে সব বিধায়কদের যাওয়ার তাড়াতাড়ি চলে যান। নতুন কর্মীরা জায়গা দখল করে নিচ্ছে। এক জন যাবে, আমরা ৫০০ জন তৈরি করব’।
নজরুল মঞ্চের সভা থেকে মমতা বলেন, ‘মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ রক্ষা করতে হবে। নিজের নিজের এলাকা ভালো রাখুন। ঠিকমতো পরিষেবা দিন। ডেঙ্গি রুখতে ভালো ভাবে প্রস্তুতি রাখতে হবে। বিশেষ করে উত্তর ২৪ পরগনায় কয়েকটা পকেটে ডেঙ্গি বেশি হয়। সেখানে এখন থেকেই অ্যাকশন নিতে হবে। মনে রাখবেন, এলাকায় ভালো কাজ না হলে, দোষ পড়ে দলের উপর। ভালো কাজ হলে দলের সুনাম বাড়ে’। আগামী বছরের গোড়ার দিকে কলকাতা পুরসভা নির্বাচনের সম্ভাবনা। আজকের বৈঠক থেকে কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলরদের সম্পর্কে খোঁজ করেন নেত্রী।