জ্বলন্ত ইতিহাস। দাউদাউ করে চোখের সামনে জ্বলছে ইতিহাস। কিন্তু কিছু করারও ছিল না। সোমবার বেলা সাড়ে দশটা-এগারোটা। হাওড়া রেল মিউজিয়ামের সীমানা লাগোয়া ৭ নম্বর সিক লাইনে রাখা একটি বহু পুরনো আমলের সেলুন কার দাউদাউ করে জ্বলছে।
ঘন জঙ্গলের মধ্যে রাখা এই কোচে আগুন লাগার বিষয়টি অনেক পরেই জানতে পারেন রেল কর্তারা। জানার পরও বেশ খানিকক্ষণ পরে ঘটনাস্থলে আসে দমকলের দু’টি ইঞ্জিন। ততক্ষণে সব শেষ। ব্রিটিশ জমানার পুরনো কোচটি কাঠের হওয়ায় তা জ্বলে ছাই হতে বেশি সময় লাগেনি। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ রেল মিউজিয়ামের পাশে ঘন জঙ্গলের মধ্যে থেকে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী, সঙ্গে আগুনের লেলিহান শিখা দেখা যায়। পরে রেল দমকলে খবর দিলে দমকল আসে। আগুন আয়ত্তে এলেও সেলুন কারটি একেবারে ছাই হয়ে যায়।
আগুন লাগার কারণ পুলিশ ও দমকল কেউই এখন সঠিকভাবে না জানালেও পাশে থাকা বিড়ি, সিগারেটের আগুন থেকে এই আগুন লাগতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। তবে ওই অঞ্চলটি একেবারে লোকচক্ষুর আড়ালে থাকায় রাতে আসামাজিক লোকজনের আড্ডা বসে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। মদ, গাঁজা, জুয়ার ঠেক চলে গোপনে। তাদের ফেলা আগুন থেকে এই আগুন লাগতে পারে। স্থানীয়দের অনেকেই বলেন, রাতেই আগুন লাগে।
আপাতভাবে এই পুরনো কোচের মূল্য রেলের খাতায় স্ক্রাপে ওঠার মতো হলেও ‘অ্যান্টিক ভ্যালু’ অপরিমেয়। ফলে তা ভস্মীভূত হওয়ায় রেলের ইতিহাসের প্রভূত ক্ষতি হয়েছে বলে রেল কর্তাদের মত। অতি প্রাচীন এই কোচ ওখানে এল কী করে? এনিয়ে সঠিক তথ্য দিতে পারেননি রেলকর্তারা। কারও মতে, মিউজিয়ামে স্থান সংকুলান না হওয়ায় কোচটি সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল বাইরে। ঐতিহাসিক মূল্যে কোচটির গুরুত্ব পাওয়া উচিত ছিল। তবে তা কেন ওভাবে ফেলে রাখা হয়েছিল জঙ্গলের মধ্যে, খতিয়ে দেখা হবে বলে জানা গিয়েছে। এইভাবে একের পর এক ইতিহাস জ্বলছে, হয়ে উঠছে জীবাশ্ম।