অবশেষে রাজ্যসভা থেকে বিদায় নিলেন ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং৷ একটানা ২৮ বছর কাজ করার পর শুক্রবারই ছিল তাঁর রাজ্যসভার সাংসদ থাকার শেষ দিন। ২৮ বছরের সাংসদ থাকাই শুধু নয়, তিনি ১০ বছরের প্রধানমন্ত্রী এবং তিনিই ছিলেন একদা দেশের অর্থমন্ত্রী। সেই মনমোহনের এই বিদায় একেবারেই অনাড়ম্বর৷ না কোনও বিদায়ী বক্তৃতা, না কোনও অভিনন্দনের উত্তাপ, না কোনও বিশেষ সংবর্ধনা৷ মনমোহনের এই বিদায়টাও তাঁর নিজের মতো খুবই চুপচাপ এবং অনড়ম্বরে হল৷
মনমোহনের রাজ্যসভায় প্রবেশ ১৯৯১ সালে৷ তারপর ৭ বার তিনি রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন৷ প্রধানমন্ত্রী যখন ছিলেন, তখনও রাজ্যসভাতেই ছিলেন৷ একবার নয়াদিল্লি কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে গিয়েছিলেন৷ তারপর আর কোনওদিন লোকসভায় লড়েননি৷ এখন অসম থেকে রাজ্যসভায় নির্বাচিত ছিলেন৷ কংগ্রেসের সমস্যা হল, এখনই রাজ্যসভায় কোনও পদ খালি নেই৷ গুজরাটে কিছুদিন পরে দুটি আসনের নির্বাচন হবে৷ কারণ, অমিত শাহ এবং স্মৃতি ইরানি লোকসভায় নির্বাচিত হয়েছেন এবং রাজ্যসভার পদ ছেড়ে দিয়েছেন৷ সেই দুই পদে নির্বাচন হলে একটি বিজেপি পাবে ও একটি কংগ্রেস৷
তবে কংগ্রেস বৃহস্পতিবার আশঙ্কা প্রকাশ করে রেখেছে যে, দুটি আসনে বিজেপি-কে জেতাতে একটা চক্রান্ত চলছে৷ দু’জনের লোকসভার ফল দু’দিন বেরিয়েছে, এই যুক্তিতে আলাদাভাবে দুটি আসনের নির্বাচন হতে পারে৷ কিন্তু এতদিন ধরে এ রকম সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনও নজির নেই৷ যদি দুটি আসনে একসঙ্গে নির্বাচন হয় তা হলে কংগ্রেসের সামনে একটা সুযোগ থাকবে একজন নেতাকে জিতিয়ে আনার৷ না হলে আরও পরের কোনও সুযোগের জন্য অপেক্ষা করতে হবে৷
লোকসভার অধিবেশন এ বার শুরু হচ্ছে আগামী সোমবার থেকে৷ প্রথম ২ দিন নতুন সাংসদরা শপথ নেবেন৷ তারপর স্পিকার নির্বাচন হবে৷ তাই রাজ্যসভার অধিবেশন বসবে ২০ তারিখ থেকে৷ সেদিন থেকে মনমোহন আর সভায় থাকবেন না৷ নোটবন্দি হওয়ার পর মনমোহন রাজ্যসভায় বলেছিলেন, এটা ‘মনুমেন্টাল ব্লান্ডার৷ অর্গানাইজড লুট অ্যান্ড লিগালাইজড প্লান্ডার অফ কমন ম্যান৷’ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে রাজ্যসভায় এ রকম সমালোচনা শুনতে হবে না আর শুনতে হবে না বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে।