রথযাত্রার মাস খানেক আগে ভারতের পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে হৈ হৈ কাণ্ড বেঁধে যায়। কারণ, হারিয়ে গেছে মন্দিরের মূল কোষাগারের চাবি!
মন্দির সুত্রে জানানো হয়েছে, ১২ শতকে তৈরি হওয়া মন্দিরের মূল কোষাগার ১৯৭৭ সালের পর থেকে আর খোলা হয়নি।
“কত টাকার রত্ন আছে তা হয়ত কেউ জানে না… কিন্তু শত শত বছর ধরে পুণ্যযাত্রীরা যা যা দানসামগ্রী দিয়েছেন, তা আছে এই রত্ন ভাণ্ডারে। বেশ কয়েকশ কোটি টাকার সোনা-দানা এবং অন্যান্য মণি–মানিক্য আছে এই রত্ন ভাণ্ডারে,” জানিয়েছেন মন্দিরের এক সেবায়েত।
পুরীর জগন্নাথ মন্দির সারা দুনিয়ার হিন্দুদের কাছে এক পবিত্র তীর্থস্থান এবং প্রতি বছর লাখ লাখ তীর্থযাত্রী যাদের মধ্যে বাংলাদেশের অনেক মানুষও থাকেন– পুরীতে ‘জগন্নাথ দর্শনে’ যান।
সম্প্রতি প্রকাশিত এক তালিকা অনুযায়ী, কেরালার পদ্মনাভস্বামী মন্দির এবং অন্ধ্র প্রদেশের তিরুপতি মন্দিরের পর, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের মূল কোষাগারে গচ্ছিত আছে সব থেকে বেশি সোনা-দানা ।
এখন মন্দিরের কোষাগারের চাবি হারানোর খবরে বিপর্যস্ত উড়িষ্যার নভিন পাটনায়ক সরকার। কারণ, পুরীর শঙ্কর আচার্য স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী ঘটনার পূর্ণ তদন্ত চাইছেন। রাজ্যে বিরোধী দল বিজেপিও সেই সুরে সুর মিলিয়েছে।
জনরোষের মুখে আজ নভিন পাটনায়ক সরকার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন এবং শিগগির রিপোর্ট চেয়েছেন।
জানা গেছে, পুরীর রত্ন ভাণ্ডারের মধ্যে সাতটি কক্ষ আছে,যার মধ্যে পাঁচটি কক্ষে যাওয়ার মূল চাবিটি পাওয়া যাচ্ছেনা।
কবে থেকে চাবি পাওয়া যাচ্ছেনা তা নিয়ে অনেক দ্বিমত আছে, তবে চাবি না পাওয়ার ঘটনা সামনে আসে গতকাল।
সম্প্রতি, পুরী মন্দিরের কাঠামোগত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে একটি কমিটি গঠন করে উড়িষ্যা হাই কোর্ট। সেই কমিটি যখন মন্দির পর্যবেক্ষণ করতে যায়, তখন তারা কোষাগারে প্রবেশ করতে পারেননি চাবি না থাকার জন্য।
“সেই কমিটির এক সদস্য নিজের নাম গোপন রেখে বিষয়টি জানিয়ে দেন সংবাদ মাধ্যমকে, তাই এই ঘটনাটি এখন জনসমক্ষে এসেছে,” জানিয়েছেন মন্দিরের এক সেবায়েত।
ধর্মপরায়ণ হিন্দুদের কাছে জগন্নাথ মন্দিরের প্রতি রয়েছে এক আলাদা আবেগ এবং তাই চাবি হারিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি নিয়ে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়েছে হৈ চৈ।
উড়িষ্যাতে আগামী বছর বিধানসভার নির্বাচন আর রাজ্যের মূল বিরোধী দল বিজেপি নভিন পাটনায়েকের পার্টিকে তুলাধুনা করা শুরু করেছে।
জগন্নাথ মন্দিরের চাবি হারানোর ঘটনার জল অনেক দূর গড়াবে, মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। এখন দেখা যাক সামনে কী অপেক্ষা করছে।