রবিবার ভারত এমন একটা ম্যাচ জিতল, যেখানে প্রায় সব কিছুই ঠিকঠাক করেছে বিরাট কোহলির দল। সবাই জানে, ভারতের প্রথম তিন ব্যাটসম্যান যে দিন খেলবে, সে দিন দলটা অপ্রতিরোধ্য। সে রকমই একটা দিন গেল। ভারতের প্রথম তিন জনের রান এ রকম: শিখর ধওয়ন ১০৯ বলে ১১৭, রোহিত শর্মা ৭০ বলে ৫৭ আর বিরাট কোহালি ৭৭ বলে ৮২। এর পরে দলের স্কোর ৩৫২ হলে আশ্চর্যের কী আছে!
ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ শুরুর কিছু পরে টিভি-তে ভাষ্যকারদের কাউকে কাউকে বলতে শোনা গেল, ওভালে খুঁজে পেতে গোটা তিরিশেক হলুদ জার্সির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নাকি অস্ট্রেলিয়ার সাপোর্ট স্টাফ! ওভালের বাকি অংশে শুধুই নীলের জোয়ার, নীলের গর্জন। ম্যাচের পরে গর্জন যে আরও বাড়বে, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ ছিল না৷ আর এই ম্যাচ যে ভারতই জিততে চলেছে তাও সময়ের সঙ্গে স্পষ্ট হচ্ছিল৷
সেন্ট্রাল লন্ডনের ওভালে কোহালি যখন টস জিতে ব্যাট নিল, অনেকেই হয়তো অবাক হয়েছিলেন। কিন্তু ভারতের প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে ওভালের উইকেটে যে রকম বাউন্স আর মুভমেন্ট দেখেছিলাম, এ দিন সে রকম কিছুই ছিল না। অস্ট্রেলিয়ার পেসাররা কোনও চাপই তৈরি করতে পারেনি ভারতীয় ওপেনারদের উপরে।
দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে রোহিত দেখিয়েছিল, ও ছন্দে ফিরেছে। ধওয়ন অস্ট্রেলিয়া ম্যাচটাকে বেছে নিল নিজের অন্যতম সেরা ইনিংস খেলার জন্য। এই দুই ওপেনার প্রথম উইকেটের জুটিতে ২২.৩ ওভারে ১২৭ রান তুলে শুরুতেই অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেয়।
সাড়ে তিনশো রান তাড়া করা কখনওই সোজা কাজ ছিল না। কোহলির নেতৃত্ব অস্ট্রেলিয়ার কাজটা আরও কঠিন করে দিল। বোলিং পরিবর্তন হোক কী ফিল্ড প্লেসিং— বিপক্ষের ওপর সারাক্ষণ চাপ রেখে গিয়েছে ভারত অধিনায়ক। চহালকে এন্ড পরিবর্তন করে প্যাভিলিয়ন প্রান্ত থেকে নিয়ে আসে কোহালি। কারণ ওই সময় হাওয়া উল্টো দিক থেকে বইছিল। যে কারণে চহাল ওই প্রান্ত থেকে এসে ফ্লাইট করালে বল একটু ডিপ করে যাচ্ছিল। ব্যাটসম্যানরা টাইমিং করতে পারছিল না। ওই ভাবেই আউট হল ডেভিড ওয়ার্নার। ভেবেছিল স্টেপ আউট করে উইথ দ্য টার্ন বলটাকে মেরে দিতে পারবে। কিন্তু চহাল হাওয়ার উল্টো দিকে বল করছিল। বলটা ওয়ার্নারের কাছে পৌঁছতে সেকেন্ডের ভগ্নাংশ বেশি সময় নেয়। টাইমিংয়ে তাই গন্ডগোল হয়ে যায় অস্ট্রেলীয় ওপেনারের। কোহালি তত ক্ষণে ডিপ মিডউইকেটে ফিল্ডার রেখে দিয়েছিল ও রকম একটা মিসটাইম শটের জন্য।
তবু শুধু তিন ব্যাটসম্যানের ফর্মই অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ থেকে ভারতের প্রাপ্তি হয়ে থাকল না। আরও কয়েকটা ব্যাপার ঠিকঠাক হওয়ায় ভারত সত্যিই এখন ভয়ঙ্কর৷ এই ম্যাচ থেকে তা হলে প্রাপ্তির ঘরে কী থাকল? এক, টপ অর্ডারের ফর্ম। দুই, হার্দিক পাণ্ড্যর (২৭ বলে ৪৮) ডেথ ওভার ব্যাটিং। তিন, মাঝের ওভারে কুল-চা জুটির স্পিন আক্রমণ। চার, কোহালির অধিনায়কত্ব এবং পাঁচ) ভুবনেশ্বরের নতুন এবং পুরনো বলের স্পেল। যে জন্য ৩৬ রানে জিততে সমস্যা হল না ভারতের৷