লোকসভা নির্বাচনে বাংলার পালে উঠেছিল গোপনে রাম-বাম আঁতাতের কথা। বাংলায় গেরুয়া শিবির আগেরবারের থেকে কিছুটা আসন বাড়াতে পেরেছে তা বামেদের ভোট ব্যাঙ্ক লালে না পড়ে পড়েছিল গেরুয়ায়। শীর্ষ নেতারা এই আঁতাতের কথা স্বীকার না করলেও ভোট শতাংশের পার্থক্য থেকেই সেই চিত্র স্পষ্ট। আর তার জন্যই একেবারে শূণ্য হাতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে সিপিএমকে। এইবার সেই হারের কারণ খুঁজতে সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকে বসেছিল আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। আর সেখানেই বর্তমান বামেদের শীর্ষ নেতাদের ওপর ক্ষোভ উপড়ে দিলেন বিভিন্ন জেলার নেতারা। পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে এক বক্তা যেমন বলছেন, ‘এ বার অন্তত সরুন। আপনাদের দেখলে পার্টি সম্পর্কে মানুষের মধ্যে বিরক্তি বাড়ছে।’
সিপিএম সূত্রের খবর, মঙ্গলবারের রাজ্য কমিটির বৈঠকে হাওড়া, উত্তর চব্বিশ পরগনা, পূর্ব বর্ধমানের মতো অন্তত হাফ ডজন জেলা সরাসরি দাবি জানিয়েছে, অবিলম্বে রাজ্য নেতৃত্বের মুখ বদল হোক। বৈঠকে কৃষক, ক্ষেতমজুর ও শ্রমিক ফ্রন্টের একাধিক নেতা নাম না করে সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসুদের ইঙ্গিত করে পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে বলেছেন, ‘আপনারা অন্তত এ বার বুঝুন, আপনাদের কেউ পছন্দ করছে না। আপনাদের দেখলে পার্টি সম্পর্কে মানুষের মধ্যে বিরক্তি বাড়ছে।’
নির্বাচনে যে বামেদের ভোটে ব্যাপক ধস নামবে তা যে সিপিএমের নিচু তলা আন্দাজ করেনি তা নয়। কিন্তু পাত্তা দেয়নি রাজ্য নেতারা। একটি সূত্রের মতে, ভোটের দশদিন আগে পূর্ব বর্ধমান জেলার সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে এক সদস্য রিপোর্ট করেছিলেন , ভোট শতাংশ দশের নীচে নেমে যেতে পারে। কিন্তু কান দেয়নি নেতারা। বাম শীর্ষ নেতাদের এই গদি আঁকড়ে থাকার প্রবণতাই এই বিপর্যয়ের কারণ তা এইবার রাখঢাক না রেখে সরাসরি আক্রমণের পথে গেলেন রাজ্যের অন্যান্য দলীয় নেতারা।