বাংলা ও বাঙালীর সংগঠন বাংলা পক্ষ। গত একবছর ধরে ধারাবাহিক ভাবে বাংলা ও বাঙালীর জন্য নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে এই সংগঠন। বাংলা পক্ষ জানিয়েছে তারা বাঙালী জাতির কাছে উত্তরদায়ী কারণ আমরা জাতি যোদ্ধা। আমার পক্ষ, তোমার পক্ষ, বাঙালীর পক্ষ, মায়ের পক্ষ – বাংলা পক্ষ।
১/ ধুতি-লুঙ্গি-সহ বাঙালির পোষাকের ওপর বানিয়া কোয়েস্ট মল নিষেধাজ্ঞা জারি করলে ‘বাংলা পক্ষ’ কলকাতার সেই মল ঘেরাও করেছে। সংগঠনের সদস্যরা লুঙ্গি ও ধুতি পরিহিত অবস্থায় গণহারে মলের ভিতরে ঢুকে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। মল মালিককে বাধ্য করেছে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাইতে।
২/ দিল্লির স্বার্থবাহী বহুজাতিক ভারতীয় মোবাইল নেটওয়ার্ক সার্ভিস প্রোভাইডার এয়ারটেল বিকৃত বাংলায় বিজ্ঞাপন প্রকাশ করলে, তার বিরুদ্ধে এয়ারটেলের অফিস ঘেরাও করেছে। ক্ষমা চেয়েছে এয়ারটেল। ভবিষ্যতে ফের এই ধরণের কাজ হলে এয়ারটেলের ব্যবসা কীভাবে এখানে চলতে পারে আমরা দেখবো। অন্য সংস্থাগুলির ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার।
৩/ মারোয়াড়ী মালিকানাধীন বিআরজি গ্রুপ – তাদের সদর দফতর কলকাতায় এবং খড়গপুরে কারখানা আছে। এই গোষ্ঠী চাকরির বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে। তাতে লেখা থাকে যে বাঙালী নেওয়া হবে না। বাংলা পক্ষ এদের সদর দফতরে হানা দেয়, এদের কত ধানে কত চাল তা শান্তিপূর্ণ ভাবে বোঝায় এবং এরকম সকল বাংলা ও বাঙালী বিরোধী সংস্হাকে হুঁশিয়ারি দেয় যে এসব আবার করলে আমরা, বাংলা পক্ষ শান্তিপূর্ণভাবে বাঁকা আঙ্গুলে ঘি তুলবে।
৪/ দিল্লি বোর্ডের মাধ্যমে মেডিক্যালে প্রবেশিকা পরীক্ষার জন্য যে অভিন্ন নিট পরীক্ষা চালু করেছে দিল্লি সাম্রাজ্যবাদ, যার জেরে বাংলা ও অন্যান্য অহিন্দি-অইংরেজি বোর্ডের ছাত্রছাত্রীরা মেডিক্যালে সুযোগ পাচ্ছেন না এবং এর প্রতিবাদে আত্মঘাতী হয়েছেন আমাদের তামিল বোন অনিথা , দরিদ্র পরিবারের এই মেয়ে উচ্চমাধ্যমিকে অভাবনীয় সাফল্য পেলেও ভিনদেশি দিল্লিবোর্ডের পরীক্ষায় সফল হননি– বাংলা পক্ষ নিটের বিরুদ্ধে, শিক্ষায় হিন্দি ও হিন্দুত্বের আধিপত্যের বিরুদ্ধে ও শিক্ষা নিয়ে দিল্লি বোর্ডের ব্যবসা পাতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। অনিথার মৃত্যুর প্রতিবাদে পশ্চিমবাংলার মূর্শিদাবাদের লালগোলায় বিক্ষোভ দেখিয়েছে মুর্শিদাবাদ বাংলা পক্ষ।
৫/ বাংলা সিনেমার উপর থেকে ভারত সরকারের কেন্দ্রীয় পণ্য ও পরিষেবা কর বা জিএসটি প্রত্যাহারের দাবিতে পুরানো হিন্দ সিনেমা হল ও অধুনা হিন্দ মাল্টিপ্লেক্সের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হয়েছে বাংলা পক্ষ।
৬/ বাংলার শ্রমজীবী বাঙালি ভাই আফরাজুলকে হিন্দুত্ববাদ তাদের দেশে খুন করেছিল, সেই হত্যার প্রতিবাদে কলকাতায় অবস্থিত রাজস্থান সরকারের ট্যুরিজম দফতরের শাখা অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে।
৭/ মহান একুশে ফেব্রুয়ারির ভাষা দিবস পালিত হয়েছে শ্রদ্ধায় ও শপথে।
৮/ মেট্রোর স্মার্টকার্ডে বাংলা চালু করার দাবিতে এবং মেট্রোরেলে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলা ভাষা জানা বাধ্যতামূলক করার দাবিতে কলকাতার মেট্রোভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে। মেট্রোর স্মার্টকার্ডে বাংলা চালু করার দাবির সাথে সহমত পোষণ করে বাংলার নির্দল সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লির ইউনিয়ন পার্লামেন্টের রাজ্যসভায় আমাদের দাবি উত্থাপন করেছেন। আমাদের এই দাবি মানতে বাধ্য হয়েছে ভারতের রেলমন্ত্রক।
৯/ বাংলায় মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর রামনবমীর মতো বহিরাগত হল্লার মাধ্যমে সুপরিকল্পিত হামলা চালিয়ে বাঙালি হিন্দু ও বাঙালি মুসলমানের চিরায়ত ঐক্যে হিন্দুত্ববাদীরা ফাটল ধরানোর চেষ্টা করলে বাংলা পক্ষ তার প্রতিবাদ করেছে। বাংলার গণসমাজের সংহতি ও সম্প্রীতির সুদৃঢ় ক’রে হিন্দি-হিন্দু-হিন্দুস্তানের বহিরাগত হামলাবাজদের রুখে দেওয়ার লক্ষ্যে বর্ধমান জেলায় গিয়েছেন বাংলা পক্ষের নেতৃত্বের একাংশ। তৈরি হয়েছে বর্ধমান বাংলা পক্ষ।
১০/ নতুন বাংলা বছরের পশ্চিম বাংলার পয়লা বৈশাখে বাংলা পক্ষ প্রকাশ করেছে আপাত চুড়ান্ত লক্ষ্যের খসডা ও অন্তবর্তীকালীন ৩০ দফা দাবি সনদ।
১১/ ন্যাশানাল হাইওয়ের মাইল ফলকে বিজাতীয় হিন্দিভাষা চাপিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচী নেওয়া হয়েছে।
১২/ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউজিসি কর্তৃক হিন্দি দিবস পালন করা হলে তার বিরুদ্ধে আমরা প্রতিবাদ করেছি যাদবপুরের মাটিতে।
১৩/ ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রে বাংলা ভাষার অমর শহীদদের রক্তে রাঙা মহান ১৯শে মে পালিত হয়েছে শ্রদ্ধায়, স্মরণে ও শপথে।
১৪/ বাংলার দুটো রাজনৈতিক দলের শাখা, কনস্টেবল ভর্তির পরীক্ষা, হিন্দি ও উর্দুতে পরীক্ষা নেওয়ার দাবী জানিয়েছে এবং কোর্টে গেছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পূর্বঘোষণা অনুযায়ী কনস্টেবল ভর্তির পরীক্ষা যাতে বাংলায় (পাহাড়ে নেপালীতে) নেওয়া হয়, সে জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি, প্রচার এবং মুখ্যমন্ত্রীকে গণ ইমেল করা হয়েছে।
সর্বস্তরের বাঙালীর মধ্যে বাংলা পক্ষর গ্রহণযোগ্যতা ও সমর্থন বাড়ছে। বাঙালীর বিজয় পতাকা উড়ুক শূন্যে- বাংলা পক্ষের হাত ধরে।