দীর্ঘকালীন অসুস্থতার পর ৭২ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন বিশিষ্ট খাদ্য কলামিস্ট এবং রেস্তোরাঁর মালিক জিগস কালরা। “ভারতীয় খাবারের জার” এবং “জাতির স্বাদ সৃষ্টিকর্তা” হিসাবে খ্যাত ছিলেন তিনি। কালরা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতীয় খাবার পরিবেশনার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন অন্যতম মুখ।
বিগত কয়েক মাস ধরেই তিনি ভুগছিলেন বার্ধক্য জনিত অসুখে। অবশেষে আজ সকালে তাঁর প্রয়াণ ঘটে। কালরার পুত্র জোরাওয়ার কালরা এই দুঃসংবাদ জানিয়েছেন। তাঁর প্রয়াণে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
আসল নাম জে ইন্দর সিং কালরা হলেও জিগ্স নামেই তিনি জনপ্রিয় ছিলেন। ভারতীয় রসনা সম্পর্কে তাঁর জ্ঞান ছিল অভিধানসম। ভারতীয় টেলিভিশনের আদিযুগে দূরদর্শনে তিনি দীর্ঘ দিন ধরে রসনা সংক্রান্ত অনুষ্ঠান করে জনপ্রিয় হয়েছিলেন। সারা জীবনে মোট ১১টি বই লিখেছিলেন জিগ্স কালরা। এর মধ্যে তাঁর লেখা ‘প্রসাদ’ বইটি ভারতীয় পাচকমহলের বাইবেল হিসেবে গণ্য করা হয়। জিগ্স কালরার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বিশিষ্ট রসনা বিশেষজ্ঞ তথা লেখক বীর সাংভি, হনসল মেহতা, বিবেক রঞ্জন অগ্নিহত্রী প্রমুখ।
রসনার সঙ্গে জিগ্স কালরার সম্পর্ক ছিল সুনিবিড়। তাঁকে বলা হত, ভারতীয় রসনাশিল্পের সম্রাট। একাধারে রন্ধনশিল্পী, রেস্তোরাঁ পরিচালক, রসনা বিশেষজ্ঞ, লেখাক ও নিবন্ধকার হিসেবে তিনি সুবিদিত। ‘পঞ্জাব গ্রিল’, ‘মেড ইন পঞ্জাব’, ‘মসালা লাইব্রেরি’, ‘পা পা ইয়া’ ও ‘ফরজি কাফে’-সহ দেশের বেশ কয়েকটি স্বনামধন্য ভোজনশালা তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
এছাড়া, দেশ-বিদেশের অসংখ্য রেস্তোরাঁ ও হোটেলে ছড়িয়ে রয়েছেন তাঁর অগণিত ছাত্রছাত্রী। আইটিসি, ওবেরয় গ্রুপ ও পার্ক গ্রুপের হোটেলের পাকশালায় তাঁর রসনাশৈলীর বিপুল প্রভাব পড়েছে। রাজকুমারী ডায়ানা, যুবরাজ চার্লস, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন তাঁর রান্নার বিশেষ গুণমুগ্ধ ছিলেন।
খাদ্য সমালোচক এবং কালরার সহকর্মী ভির সাংভি তাঁর মৃত্যুতে সমব্যথিত হয়ে টুইটারে একটি পোস্ট করেছেন। টুইটারে তিনি লিখেছেন, “ বিদায় পুরনো বন্ধু। কালরা ভারতীয় খাবারের অনেক গোপন রহস্য উদ্ধার করেছেন। আর দ্বিতীয় জিগস হবে না কখনও”।