লোকসভা ভোট চলাকালীন যে ঘৃণ্য কাজটি শুরু করেছিল ভোট মিটতেও তা চলছেই। এর আগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্মানহানির চেষ্টায় তাঁর ভাষণের ভিডিও বিকৃত করে বিজেপির রাজ্য শাখার অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে তা টুইট করা হয়েছিল। হাওড়ার উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ তথা প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ সুলতান আহমেদের স্ত্রী সাজদা আহমেদের সম্মানহানির চেষ্টাতেও ক্রমাগত ফেক নিউজ ছড়ানো হচ্ছিল। এবার তাদের নিশানায় তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা তৃণমূলের সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তী।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে তৃণমূলের এই রাজ্যসভার সাংসদের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে তাঁকে বলতে শোনা গেছে ‘বাংলায় হিন্দুদের… আরো ভোট দিতে দেওয়া যাবেনা’। বিজেপির নানা ‘পেইড’ মিডিয়া এবং কিছু চরম দক্ষিণপন্থী ওয়েবসাইটেও এই খবর প্রকাশিত হয়। সেইসঙ্গে এমন অভিযোগ করা হয় যে, এই ভিডিওটি তখন নেওয়া হয়েছে যখন দক্ষিণ ২৪ পরগনার তৃণমূল জেলা সভাপতি সদ্যসমাপ্ত লোকসভা ভোটের ফলাফল নিয়ে পর্যালোচনা করছিলেন। কিন্তু বাস্তবে ওই ভিডিওটি ভুয়ো। শুভাশিস চক্রবর্তী আদপেও এরকম কিছু বলেননি। তিনি জানান, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কাটছাঁট করে ছড়ানো হয়েছিল।
সোশ্যাল মিডিয়াতে একটি নতুন ভিডিওতে শুভাশিস বলেন, তিনি আগের ভিডিওতে বাস্তবে কি বলতে চেয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘আমি ক’দিন ধরেই উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, কিছু সংবাদ মাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়া আমার একটা বক্তব্যকে কাটছাঁট করে বিকৃত ভাবে প্রচার চালাচ্ছে। আমার সম্পূর্ণ বক্তব্যকে তুলে ধরা হয়নি।’ এরপরেই বিজেপির নাম না করে তিনি অভিযোগ করেন যে, ‘আমি মনে করি, একটা বিশেষ রাজনৈতিক দল, যারা ধর্মীয় মেরুকরণে বিশ্বাস করে, তাদের মদতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আমার বক্তব্যকে বিকৃত করে আমার ভাবমূর্তিকে কলুষিত করার চেষ্টা করছে…আমি এর তীব্র প্রতিবাদ করছি।’
একইসঙ্গে ওই ভিডিওয় মানুষের কাছে তাঁর অনুরোধ, ‘আমার সমস্ত সহকর্মী-শুভাকাঙ্ক্ষী-সমব্যথী এবং আমায় যারা ভালবাসেন এবং মা-ভাই ও বোনদের কাছে আমার আবেদন, এই বিকৃত সংবাদের প্ররোচনায় আপনারা পা দেবেন না, কান দেবেন না। আমি আইনজীবী হিসেবে জানি, সব মানুষের প্রকৃত ভোটাধিকার প্রয়োগের অধিকার রয়েছে। তাই হিন্দু হোক, মুসলমান হোক, শিখ-খ্রীস্টান সব মানুষ তাদের প্রকৃত ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।’ শুভাশিস এ কথাও মনে করিয়ে দেন যে, ‘১৯৯৩ সালের ২২ জুলাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আমরা সচিত্র পরিচয়পত্রের আবেদন করেছিলাম। এবং তারই ভিত্তিতে আজ বাংলা-সহ সারা ভারতবর্ষে পরিচয়পত্র চালু হয়েছে।’ তিনি ওই ফেক নিউজের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে চলেছেন বলেও ভিডিওতে জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ।